জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা আগামীকাল বুধবার (১০ জানুয়ারি) শপথ গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা নিজেরা আগে বৈঠক করবেন, তারপর শপথ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেবেন। দলটি এবার ১১টি আসনে জয় পেয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) জাতীয় পার্টির (জাপা) একটি সূত্র থেকে এ তথ্য জানা যায়।
সূত্র জানায়, দলটির পক্ষ থেকে স্পিকারকে একটি চিঠি দিয়ে বুধবার শপথ নিতে না যাওয়ার বিষয়টি জানানো হবে। বেলা তিনটার দিকে চিঠিটি লিখে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছিল। এতে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের ঢাকায় না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে শপথ নিতে না যাওয়ার কথা বলা হবে।
আরও জানিয়েছে, জি এম কাদের দু-এক দিন পরে ঢাকায় ফিরবেন। এরপর দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটে নির্বাচিত নতুন সংসদ সদস্যদের শপথগ্রহণ বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশ নেয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। ফলে জাপাকে ২৬টি আসনে ছাড় দিয়ে সেসব আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সরিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত ১৫ স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে যান জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীরা। দলটির মাত্র ১১ প্রার্থী জয়ী হতে পেরেছেন।
হেরে যাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদের, যিনি ঢাকা-১৮ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন। তাকে ছাড় দিয়ে এ আসন থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সরিয়ে নেয় আওয়ামী লীগ। তারপরও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী খসরু চৌধুরীর কাছে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে হেরে যান শেরিফা কাদের।
বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী জাপার জয়লাভ করা প্রার্থীরা হচ্ছেন— দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের (রংপুর-৩), মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু (কিশোরগঞ্চ-৩), কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৫), এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার (পটুয়াখালী-১), প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী (ফেনী-৩), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (ঠাকুরগাঁও-৩), গোলাম কিবরিয়া (বরিশাল-৩), এ কে এম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫), মো. আশরাফুজ্জামান (সাতক্ষীরা-২), এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান (কুড়িগ্রাম-১) ও শরিফুল ইসলাম (বগুড়া-২)। তাদের মধ্যে রুহুল আমিন হাওলাদার ও আশরাফুজ্জামান ছাড়া বাকিরা বর্তমান সংসদে এমপি হিসেবে আছেন।
জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্যদের মধ্যে নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন– সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমান, পনির উদ্দিন আহমেদ, আহসান আদেলুর রহমান, রানা মোহাম্মদ সোহেল, শরিফুল ইসলাম, লিয়াকত হোসেন, নাসরিন জাহান, নুরুল ইসলাম তালুকদার। এর বাইরে রওশন এরশাদ ও সাদ এরশাদ নির্বাচনে অংশ নেননি। আর দলের বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেও জয়ী হতে পারেননি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পাওয়ায় শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন প্রত্যাহর করে সরে দাড়ান দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। এ ছাড়া দলের আরেক সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে হেরে গেছেন।