পাবনার ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামীণ অঞ্চলে চুরি বেড়েই চলেছে । গভীর রাতে হানা দিচ্ছে চোরের দল। ঘটছে গরু চুরি, মোটরসাইকেল চুরিসহ নানা অপরাধ। এসব ঘটনা থেকে এলাকাবাসীর জানমালের রক্ষা করতে রাতে পাহারার ব্যবস্থা করেছে গ্রামবাসী। রাত জেগে এই পাহারার ব্যবস্থায় সার্বিক সহযোগিতা করছেন আটঘরিয়া ও ঈশ্বরদী থানার সমন্বয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম ও দাশুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. বকুল সরদার।
উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়ন সুলতানপুর, বয়রা, খালিশপুর, বাড়াহুসিয়া, দরগাবাজার, পাড়াশিধাই, হাতিগাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামের গ্রামবাসী নিজেদের উদ্দ্যোগে দলবদ্ধ হয়ে রাতে গ্রামে গ্রামে পাহারা দিচ্ছে। এ দলের সদস্যরা প্রতিরাতে লাঠি, টচলাইট হাতে নিয়ে বাঁজাচ্ছেন বাঁশি আর বলছেন ‘সাবধান, সাবধান’। আবার চেক পোস্ট বসিয়ে তল্লাশিও করছেন রাস্তায় চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহন। এলাকায় সন্দেহজনক কাউকে দেখলে থানায় জানানোর জন্য জানান দিচ্ছেন এ দলের সদস্যারা।
স্থানীয়রা জানান, এলাকার বিভিন্ন স্থানে কিছুদিন আগে থেকে বেড়ে গেছে গরু চুরি, মোটরসাইকেল, ভ্যান চুরির ঘটনা। অনেকের বাড়ি ও দোকান থেকে গেইটের তালা কেটে ঘটছে চুরির ঘটনা। তবে এসব ঘটনায় চোররা ধরা পড়ে না, চুরির ঘটনায় কেউ তেমন থানায় অভিযোগও করে না। এতে করে চোরের দল থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। কোনোভাবেই তাদের দৌরাত্ম্য থামানো যাচ্ছে না। এসব ঘটনা থেকে রেহাই পেতে দাশুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বকুল সরদারের পরামর্শকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সুলতানপুর গ্রামের নবী ফকির (৩৩) নামে এক যুবক বলেন, চেয়ারম্যান ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সার্বিক সহযোগিতায় আমরা দলবদ্ধ ভাবে রাতে চুরি ঠেকাতে পাহারা দিচ্ছি। এতে গ্রামবাসী সবাই আনন্দের সাথে তাদের ডিউটি পালন করছেন। ডিউটির প্রতিরাতেই রাতে মুড়ি খাওয়া ও খেচুরী রান্নার বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। রাত জেগে গ্রাম পাহারা দেওয়ায় বর্তমানে চোরের উপদ্রপ কমেছে। তাছাড়া ঈশ্বরদী থানা পুলিশের বিট পুলিশিং টিম প্রায় প্রতিরাতেই আমাদের এলাকায় রাতে টহলে আসছে।
দাশুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বকুল সরদার জানান, বিগত কিছুদিন যাবৎ ঈশ্বরদীতে বিশেষ করে আমার ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটায় আমার পরামর্শে ও ঈশ্বরদী থানা পুলিশের সহযোগিতায় গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে নিজেরাই রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিচ্ছে। এতে আমি গ্রামবাসীকে ধন্যবাদ জানাই।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, চোরের উপদ্রপ ও চুরির ঘটনায় আমরা বিভিন্ন এলাকায় গ্রামবাসীর সঙ্গে মিটিং করেছি। থানা পুলিশের সহযোগিতায় গ্রামবাসী নিজেরাই রাতে পাহারার ব্যবস্থা করেছে। তাছাড়া থানা পুলিশের টহল টিম রাতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে টহল দিচ্ছে।