গাজায় অনেক বেশি নিরীহ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। একই সঙ্গে রাফাহ শহরে সামরিক ইসরায়েলের বিমান হামলা ও অভিযানের নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাইডেন।
তিনি বলেন, এই সংঘাতে নিহত ২৭ হাজার ফিলিস্তিনির মধ্যে বেশিরভাগই নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক, যার মধ্যে হাজার হাজার শিশুও রয়েছে।’
বাইডেন আরও উল্লেখ করেছেন, কয়েক হাজার মানুষের খাদ্য, পানি বা অন্যান্য মৌলিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত এবং অনেক পরিবার কেবল একজন নয়, অনেক আত্মীয়কে হারিয়েছে, যা হৃদয়বিদারক।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘গাজায় হারিয়ে যাওয়া প্রতিটি নিরপরাধ জীবন একটি ট্র্যাজেডি। ঠিক যেমন ইসরায়েলে হারিয়ে যাওয়া প্রতিটি নিরপরাধ জীবন একটি ট্র্যাজেডি। আমরা ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনি উভয়ের শোকার্ত পরিবারের জন্য প্রার্থনা করি।
বাইডেন আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে একটি জিম্মি চুক্তিতে কাজ করছে, যা অন্তত ছয় সপ্তাহের জন্য গাজায় একটি অবিলম্বে এবং টেকসই সাধারণ ভলো সময় নিয়ে আসবে।’
রাফাহতে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে মার্কিন আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘সেখানে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখেরও বেশি মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য পরিকল্পনা ছাড়া রাফাতে একটি বড় সামরিক অভিযান চালানো উচিত নয়।’
সহিংসতা থেকে পালিয়ে যাওয়ার কারণে রাফাহতে অনেক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, ‘তাদের রক্ষা করা দরকার।’
এদিকে একই সংবাদ সম্মেলনে জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ রাফাহ আক্রমণের ইসরায়েলের পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘এটি আরেকটি মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন স্থায়ী যুদ্ধবিরতি দরকার। এই যুদ্ধের অবসান হওয়া উচিত’ তিনি জোর দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, গেলো ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল যখন গাজার বাকি অংশে আক্রমণ চালাচ্ছিল বেসামরিক ফিলিস্তিনিরা তখন মিশরের সাথে গাজার সীমান্তে অবস্থিত রাফাহতে আশ্রয় নিয়েছিল। ইসরায়েলি বাহিনী বেসামরিকদের জন্য এটিকে একটি নিরাপদ অঞ্চল ঘোষণা করেছিল। তবে গত রবিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে রাফাহ শহরে স্থল অভিযানের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এরপর থেকেই রাফাহ অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
ফিলিস্তিনি রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিসিআরএস) জানিয়েছে, বর্তমানে রাফাহতে গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক- ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি অবস্থান করছে।
ফিলিস্তিনি সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, সোমবার মধ্যরাত থেকে রাফাহ শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও কয়েকশ মানুষ। তবে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, হামলায় ৫৩ জন নিহত হয়েছে, আর রয়টার্স বলছে, ৩৭ জন নিহত হয়েছে।