রাজশাহীতে মারা যাওয়া দুই বোন মুনতাহা মারিশা (২) ও মুফতাউল মাসিয়া (৫) নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ছিল না। অজানা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া দুই শিশুর নমুনা পরীক্ষা করে নিপাহ ভাইরাসের উপাদান পাওয়া যায়নি। কীভাবে তারা মারা গেছে তাও এখন পর্যন্ত নির্ণয় করা যায়নি। বলেছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আইইডিসিআরের পরিচালক গণমাধ্যমে এ তথ্য জানান।
ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, ‘ওই দুই শিশুর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তারা নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ছিল না।’
দুই শিশুর হঠাৎ মৃত্যু কোনো অজানা ভাইরাসে হয়েছে কি না, তা নিয়েও আলোচনা ছিল। আজ এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, ‘শুধু এটুকু বলতে পারি, নিপাহ ভাইরাসে তাদের মৃত্যু হয়নি। অন্য কোনো ভাইরাসে হয়েছে কি না, তা নির্ণয় করা হয়নি।’
দুই শিশুর বাবা মঞ্জুর হোসেন রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক। তারা ক্যাডেট কলেজের কোয়ার্টারেই ছিলেন। ছোট মেয়ের মৃত্যুর পর গ্রামে ফিরে গিয়েছিলেন। তাঁদের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামে। ওই দুই মেয়ে গৃহকর্মীর এনে দেয়া বরই খেয়েছিল। গাছতলা থেকে কুড়িয়ে বরই এনে দিয়েছিলেন গৃহকর্মী।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, দুই মেয়ে বরই খেয়েছিল। তিনি বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, বরইগুলো ধুয়ে দেওয়া হয়েছিল কি না। তাদের বাবা বলেছেন, ‘গৃহকর্মী গাছতলা থেকে কুড়িয়ে এনে দিয়েছিল, ধোয়া হয়নি।’
প্রসঙ্গত, গেলো বুধবার সকালে ছোট মেয়ে মারিশার জ্বর আসে। বিকেলে হাসপাতালে নেয়ার পথেই মাইক্রোবাসে মারা যায়। মৃত্যুর পর মা-বাবা লক্ষ করেন, মারিশার গায়ে কালো ছোপ ছোপ দাগ উঠেছে। ওই দিন রাতেই তাকে দাফন করা হয়। এক দিন পর শুক্রবার বড় মেয়ে মাসিয়ার একই লক্ষণসহ জ্বর আসে। সে-ও ছোট বোনের মতো বমি করছিল আর ঘন ঘন পানি খাচ্ছিল। লক্ষণ বুঝতে পেরে মা-বাবা দেরি করেননি। বড় বোন মাসিয়ার মৃত্যু হয় গেলো শনিবার। দুজনে রাজশাহীর সিএমএইচে ভর্তি ছিলেন।
এএম/