দেশজুড়ে

পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা!

পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা!
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় মা ও মেয়েকে হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলার আসামি মো. আবু জাফর পরকীয়া সন্দেহের জেরে ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করেন। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বাগেরহাট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আছাদুল ইসলামের আদালতে জবানবন্দি দেন আবু জাফর হাওলাদার। বাগেরহাটের পিবিআই পুলিশ সুপার আব্দুর রহমান বলেন, তদন্তের সূত্র ধরে পাপিয়ার স্বামী মো. আবু জাফর হাওলাদারকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। আবু জাফরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, আবু জাফর হাওলাদার লোক দিয়ে তার স্ত্রীকে হত্যা করেছেন। তবে তার মেয়েকে মারার কথা ছিল না। জাফর জানান, তার স্ত্রী পাপিয়ার সঙ্গে পারিবারিক কলহ চলছিল। পাপিয়া সব সময় মোবাইল ফোনে কার সঙ্গে কথা বলেন তা জানতে চান জাফর। পরে পাপিয়া তাকে জুতাপেটা করে ও বাড়ি থেকে বের করে দেন। এর আগেও পাপিয়া স্বামীকে ঝাড়ুপেটা করেন। তিনি আরও বলেন, এসব বিষয় নিয়ে স্ত্রীর প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন আবু জাফর। পূর্বপরিচিত মনির হাওলাদার নামে এক ব্যক্তি জাফরকে বলেন, কী জাফর ভাই, তোমাকে নাকি তোমার বউ জুতা দিয়ে মেরেছে। একপর্যায়ে মনির প্রস্তাব দেয় তাকে ১ লাখ টাকা দিলে সব সমস্যার সমাধান করে দেবে। তখন আবু জাফর বলেন, চিন্তা করে দেখি। পরে জাফর তার ভাই আবু তালেবের মাধ্যমে মনিরকে ৩০ হাজার টাকা দেন। মনির টাকা পেয়ে জাফরকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে নিষেধ করেন। কাজ হলে বাড়ির লোকজন তাকে জানাবে বলে জানান। কথা অনুযায়ী ২০২৩ সালের ১১ আগস্ট আবু জাফরের স্ত্রী পাপিয়া ও মেয়ে সওদা জেনিকে কুপিয়ে হত্যা করে মনির। ২০২৩ সালের ১১ আগস্ট সন্ধ্যায় শরণখোলা উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে পাপিয়া আক্তার ও তার মেয়ে সওদা জেনিকে কুপিয়ে হত্যা করে মনির ও তার লোকজন। হত্যার পরের দিনই মনিরসহ তার তিন ভাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিন মাস কারাভোগের পরে তারা জামিনে মুক্ত হন। পরবর্তী সময়ে পিবিআই বাগেরহাট মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায়। চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি পাপিয়ার স্বামী আবু জাফর হাওলাদার, ভাশুর আবু তালেব হাওলাদার ও তার স্ত্রী আসমা বেগম এবং পাপিয়ার আরেক ভাশুর মো. আবু বক্কার হাওলাদার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে পিবিআইর তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রোববার বিকেলে আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন পরকীয়া | সন্দেহে | স্ত্রীসন্তানকে | হত্যা