অপরাধ

মসজিদে নববীর ইমাম পরিচয়ে প্রতারণা, ১৯ জনকে গ্রেপ্তার সিআইডির

মসজিদে নববীর ইমাম পরিচয়ে প্রতারণা, ১৯ জনকে গ্রেপ্তার সিআইডির
সৌদি আরবের পবিত্র মসজিদে নববীর ইমামের পরিচয়ে প্রতারণা করা একটি চক্রের ১৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গেলো শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে পরিচালিত ধারাবাহিক অভিযানে প্রতারকদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত ৪১টি মোবাইল ফোন, বিপুলসংখ্যক সিম কার্ড ও ডিজিটাল আলামত উদ্ধার করেছে সিআইডি। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরে সিআইডিপ্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া। তিনি বলেন, প্রতারকরা চার বছর ধরে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মানুষকে প্রতারণা করে আসছে। এই চক্রটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে মানুষের ব্যাক্তিগত ও পারিবারিকসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিত। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন—মো. মনিরুজ্জামান ওরফে আদর (৩৭), মো. আশিকুর রহমান (২৫), মো. ফকরুল (২৫), মো. সাদ্দাম (২৬), মো. সিহাব (২৩), মোঃ সাব্বির (১৮), মো. সাগর (৩৩), মো. শাহিন (২৩), মো. কামাল (২৮), মো. আক্তার (৩৩), মো. শরীফ (২১), মো. নীরব (২১), মো. বাবলু (২৪), মো. মিজান(৩২), মো. রাসেল (৩০), মো. নূর হোসেন ওরফে কালু (২৯), মো. সোহেল (২২), মো. নয়ন (২৬), মো. শামীম (১৪)। সিআইডির রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঢাকার একজন নারী চিকিৎসকের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন একজন কথিত 'দরবেশ বাবা'। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রাজধানীর খিলগাঁও থানায় অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তে এই চক্রের কার্যকলাপ বেরিয়ে আসে। সিআইডিপ্রধান বলেন, ফেসবুক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ওই চিকিৎসকের পরিচয় হয় ভন্ড দরবেশের সঙ্গে। বিজ্ঞাপনে একজন সুদর্শন ব্যক্তি দরবেশ বেশধারী নিজেকে সৌদি আরবের মসজিদে নববীর ইমাম পরিচয় দিয়ে বলছেন, তিনি কোরআন হাদিসের আলোকে মানুষের সমস্যা সমাধানে কাজ করেন। বিজ্ঞাপনটি ওই চিকিৎসকের নজর কাড়ে। পরে বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করেন তিনি। অপরপ্রান্তে থাকা দরবেশ বাবা বেশধারী ব্যক্তি সুন্দরভাবে কথা বলে তার পারিবারিক সমস্যা শুনে সমাধানের বিনিময়ে অর্থ দাবি করেন। সিআইডি বলে, চক্রটি প্রথমে সম্পদশালী ব্যক্তিদের দারোয়ান বা গাড়িচালকদের সঙ্গে সম্পর্ক করে পরিবারের গোপন তথ্য সংগ্রহ করে স্ত্রীর কাছে স্বামীর বদনাম এবং স্বামীর কাছে স্ত্রীর বদনাম বলে কানভারী করে। তখন উভয়ের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয় এবং প্রত্যেকে তাদের সমস্যা নিরসনের জন্য পথ খুঁজতে থাকেন। এই সুযোগে ওই প্রতারকরা মসজিদে নববীর ইমামের নাম ব্যবহার করে প্রতারণা করতে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যমে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রলুব্ধ করা হয়। লটারি পাইয়ে দেওয়া, ভাগ্য-বদল, পাওনা টাকা আদায়, মামলায় জেতানো, পারিবারিক সমস্যা সমাধানের কথা বলা হয়।  

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন মসজিদে | নববীর | ইমাম | পরিচয়ে | প্রতারণা | ১৯ | জনকে | গ্রেপ্তার | সিআইডির