পিস্তল ও চাকু নিয়ে ক্লাসে পড়ানো ছিলো শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের নেশা। সিরাজগঞ্জে শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের এই শিক্ষক ইন্টারনেটে বিদেশি পিস্তলের ছবি দেখে পছন্দ হলেই ডাউনলোড করে রাখতেন।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে গণমাধ্যমকে এসব বলেন সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জুলহাজ উদ্দীন।
এর আগে গেলো সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তার কাছ থেকে দুটি পিস্তলসহ বিপুল পরিমাণ গুলি, বিদেশি ও অত্যাধুনিক বার্মিজ চাকু জব্দ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি পুলিশ।
এ ঘটনায় তাকে দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে রয়েছে দুটি সেভেন পয়েন্ট ফাইভ সিক্স বোরের বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড তাজা গুলি, ৪টি ম্যাগাজিন, দুটি বিদেশি ছুরি, ১০টি অত্যাধুনিক বার্মিজ চাকু ও দুটি ব্রাশ নাকেল। এ ছাড়া তার কাছ থেকে আইডি কার্ড ও ব্যবহৃত নিজ নামীয় ডিজিটাল সিল, গুলির খোসা, মোবাইল ফোন ও লেদারের ব্যাগও জব্দ করা হয়েছে।
এবিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার ওসি জুলহাজ উদ্দীন বলেন, তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টা ও ডিবির এক উপ-পরিদর্শক বাদী হয়ে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দুটিতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ওই শিক্ষক ইন্টারনেটে বিদেশি পিস্তলের ছবি দেখে পছন্দ হলেই ডাউনলোড করে রাখতেন। তাকে গ্রেপ্তারের পর তার মোবাইল ফোন ঘেটে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা অত্যাধুনিক বিদেশি পিস্তলের অনেক ছবি পাওয়া গেছে। তিনি বলেছেন, অস্ত্রের প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে।
এছাড়া স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের করা ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেডিকেল কলেজটিতে গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।
এরপর কমিটির সদস্যরা থানায় গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ডা. রায়হান শরিফের সঙ্গেও কথা বলেন। এ সময় ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীকে গুলি করেছেন বলে তদন্ত কমিটির কাছে স্বীকার করেছেন। শিক্ষক দাবি করেন, অনিচ্ছাকৃতভাবে তিনি এই গুলি করেছেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক বায়জীদ খুরশীদকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক মহিউদ্দিন মাতুব্বর এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।