রমজানের প্রথম দিন পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে নামাজ পড়ার সুযোগ পেয়েছেন হাজারো ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করেই ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থানে নামাজ আদায় করেন তারা। ভেতরে প্রবেশের সুযোগ না পেয়ে বাইরে জামাতে নামাজ আদায়ও করেন কয়েক হাজার মুসল্লি।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় চলছে ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডব। মুহুর্মুহু বোমা হামলার বিকট শব্দ, মাটিতে বিরামহীন মৃত্যুর অগ্নি নৃত্য, হাসপাতালগুলোতে হৃদয়বিদারক দৃশ্য, বাতাসে লাশের গন্ধ-এগুলোই এখন গাজার বর্তমান পরিবেশ। এই ভীতিকর অবস্থার মধ্যেই রমজানের প্রথম দিন নামাজ আদায় করলো আল আকসা মসজিদে।
জেরুজালেমের ইসলামিক অনুদান বিভাগের বরাত দিয়ে ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফার প্রতিবেদনে বলা হয়, আল আকসা মসজিদের ভেতরে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি তারাবির নামাজ আদায় করেছেন। জেরুজালেমে ফিলিস্তিনিদের নামাজ পড়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি পুলিশ। তারা বোলছে, মসজিদের ভেতর ও বাইরে নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের সঙ্গে জনগণের নিরাপত্তার বিষয়টি ভারসাম্য করা হয়েছে।
গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে এবার নামাজ ও রমজানের পরিবেশ অত্যন্ত দুঃখজনক বলে জানান বেশ কয়েকজন মুসল্লি। এক ফিলিস্তিনি ভারক্রান্ত মনে জানান, গাজায় যা হচ্ছে তার জন্য এবারের রমজান খুবই দুঃখজনক। জনগণ না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন, তাদের সাহায্য দরকার।
গত ৭ অক্টোবর পর্যন্ত রাফা শহরের লোকসংখ্যা ছিল প্রায় ২ লাখ ৭৫ হাজার। তবে ইসরায়েলি বাহিনী হামলার আগে বেসামরিক জনগণকে দক্ষিণে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিলে রাফায় বর্তমানে ১৫ লাখ ফিলিস্তিনির বসবাস। সরবরাহ বন্ধ থাকায় খাবারসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম আকাশচুম্বী।
নামাজ শেষে অনেক ফিলিস্তিনি রমজানে ভয়ানক কষ্টের মধ্যে রোজা পালনের কথা জানিয়েছেন। এক ফিলিস্তিনি বলেন, ‘`বাড়ি থেকে বাস্তচ্যুত হয়ে তাবুতে বসবাস করা একজন কীভাবে রমজান মাসকে স্বাগত জানাতে পারে? আমরা কীভাবে রমজানের কাছে যাবো? এবারের রমজান জাতির জন্য ভীষণ দু:খকষ্টের। আমরা আমাদের বাড়িতে রমজান উদযাপন করেতাম। আমাদের যা কিছু দরকার সবই ছিলো। মনে ছিলো শান্তি। কিন্তু আমরা এখন বাস্তুচ্যুত অবস্থায় বাস করছি।
রাফায় বাস্তুচ্যুত হওয়া অপর একজন জানান, তারা সর্বান্তকরণে পবিত্র রমজান মাসকে সব আশির্বাদসহ স্বাগত জানানোর চেষ্টা করছেন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে-সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি তাদের জন্য খুব কঠিন হয়ে গেছে। তারা শিশুদের হৃদয়ে আনন্দ দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন কারণ গাজায় ফিলিস্তিনে যা ঘটছে তার জন্য তারা শিশুদের দোষারোপ করতে পারেন না।