অর্থনীতি

সবজিতে স্বস্তি, সংযম নেই মাংস ও চালের দামে

সবজিতে স্বস্তি, সংযম নেই মাংস ও চালের দামে
সবজির বাজারের তেজ এখন অনেকটাই কমে গেছে। তবে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও গত দুই সপ্তাহ থেকে বেড়ে যাওয়া চালের দাম এখনো কমেনি। একই অবস্থা মাছ ও মাংসের বাজারেও। শুক্রবার (২৯ মার্চ)  ঢাকার বেশ কয়েকটি বাজারে নিত্যপণ্যের দামের এমন চিত্রই দেখা যায়। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, প্রতি কেজি চালের দাম গত এক সপ্তাহে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। বাজারে মোটা চালের কেজি গত এক সপ্তাহে দুই টাকা বেড়ে ৫২ টাকা হয়েছে। আর সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিতে তিন টাকা। খুচরা বাজারে এ দাম আরও একটু বেশি। শান্তিনগর বাজারসহ রামপুরা ও মালিবাগ বাজারে বিক্রেতারা জানান , আগে যে মোটা চালের (স্বর্ণা ও চায়না ইরি) কেজি ৫০-৫১ টাকা ছিল তা এখন ৫২-৫৩ টাকা। মাঝারি মানের চালের (পাইজাম ও বিআর–২৮) কেজি ৫৫-৫৬ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৭-৬০ টাকা। আর মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সরু চালের কেজিপ্রতি দাম ৬২-৭৮ টাকা থেকে বেড়ে ৬৪-৮০ টাকা হয়েছে। সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, রোজার শুরুতে বেগুনের কেজি ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এখন বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। শসার কেজি রোজার শুরুতে ছিল ১০০ টাকারও ওপরে। এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে। একইভাবে লাউ, পেঁপে, মিষ্টি কুমড়াসহ ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, করলার মতো সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজি প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। শান্তিনগর বাজারের বিক্রেতা এমদাদুল মিয়া  বলেন, এখন আর বাজারে সবজির চড়াভাব থাকবে না। দিন যত যাবে ঢাকার মানুষ কমতে থাকবে (ঈদে গ্রামে যাবে)। শাক-সবজির দামও কমতে থাকবে। এখন মোকামেও সবজির দাম প্রতিদিন কমছে। এদিকে রোজার শুরু থেকেই চড়া মাংসের বাজার,  সোনালি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকায়, কক মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায় এবং দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়। রোজার প্রথমদিকে কোথাও কোথাও গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বেশিরভাগ জায়গায় প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকায়। প্রতি কেজি খাসির মাংসের দাম রাখা হচ্ছে ১১০০ টাকা। মহাখালী বাজারে বাজার করতে আসা  এনামুল হক বলেন, সবকিছুর দাম এত বাড়তি যে, কিনে খাওয়াই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে রমজান মাস আসলে জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দেওয়া হয়, অথচ বাংলাদেশে কে কত বেশি দাম নিতে পারবে সেই প্রতিযোগিতা চলে। ব্যবসায়ী,অসাধু  সিন্ডিকেটের কাছে ক্রেতারা জিম্মি। বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, আকারভেদে চাষের পাঙাশ ১৮০-২৩০ টাকা, চাষের শিং ৫০০ টাকা, চাষের মাগুর ৫৫০ টাকা ও চাষের কৈ বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়। আর আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, বাইম ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছ বিক্রেতারা বলছে মাছের সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে। দেশি মাছের পাশাপাশি চাষের মাছেও কেজিতে দাম বেড়েছে ১০-৫০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে পেঁয়াজের বাজার গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নিম্নমুখী ছিল। এ মাসের শুরুতেও সরকারিভাবে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে ও হালি জাতের পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করায় ১২০ টাকা কেজির পেঁয়াজের দর ৬০ টাকায় নামতে দেখা যায়। কিন্তু ভারত আবারও পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে রাজধানীর বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কয়েকদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়ে গেছে ২০ টাকা পর্যন্ত। বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।  

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন সবজিতে | স্বস্তি | সংযম | নেই | মাংস | ও | চালের | দামে