গেলো বছরের ৭ অক্টোবরে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। এতে করে ৬ মাসে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে ৩৩ হাজার ১৩৭ জনে। এছাড়া এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭৬ হাজার ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নিরপরাধ শিশু ও নারী।
গণহত্যা ছাড়াও গত ছয় মাসে গাজায় অবর্ণনীয় তাণ্ডব চালিয়েছে ইসরায়েল। বিমান হামলা ও স্থল অভিযানে গাজার অন্তত ৬০ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গুঁড়িয়ে দিয়েছে ৩৯২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইসরায়েলে হামলা থেকে রেহাই পায়নি সেখানকার ১৮৪টি মসজিদও। এছাড়া গাজার ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে বন্ধ হয়ে পড়েছে ২৪টির বেশি। ১২৩টি অ্যাম্বুলেন্স আর ব্যবহারযোগ্য নেই। খবর সিএনএন।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
গণহত্যা আর ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি গাজা অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েল। সীমান্ত দিয়ে ঢুকতে দিচ্ছে না প্রয়োজনীয় ত্রাণ। এতে চরম মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন গাজার বাসিন্দারা। সেখানে নেই খাবার, নেই পানি, নেই চিকিৎসা সরঞ্জাম। দেখা দিয়েছে দুর্ভিক্ষ। ইতিমধ্যে অনাহারে, অপুষ্টিতে উত্তর গাজায় মৃত্যু হয়েছে ৩১ নিষ্পাপ শিশুর। মৃত্যুর মিছিলে রয়েছে অসংখ্য শিশু ও মানুষ।
এতকিছু করেও ক্ষান্ত হয়নি নেতানিয়াহু। আক্রমণের পরিকল্পনা করছেন গাজার দক্ষিণাঞ্চলের শহর রাফাহতে। যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ১৫ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ। ইতিমধ্যে সেখানেও বিমান হামলা চালাচ্ছে দেশটি।
প্রকৃতপক্ষে গাজাতে এখন নিরাপদ আশ্রয় বলে কোন জায়গা নেই।
যদিও রাফাহতে আক্রমণের পরিকল্পনার পর বর্তমানে ঘরে–বাইরে চাপের মুখে পড়ছে ইসরায়েল সরকার। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের পশ্চিমা দেশগুলোও এখন গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতার সমালোচনায় মুখর। স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চাইছেন অনেকেই। বিশ্বজুড়ে চলছে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ।
এমনকি খোদ ইসরায়েলেও বিক্ষোভ করছেন হাজারও মানুষ। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবি করছেন অনেক ইসরায়েলি। এরপরও চলমান সংঘাত থামাতে ইসরায়েলের কার্যকর কোনো পরিকল্পনা দেখা যাচ্ছে না।