‘ইসরায়েলি বাহিনী যদি মনে করে আমার সন্তানদের লক্ষ্য করার মাধ্যমে এই মুহূর্তে হামাসের অবস্থান পরিবর্তন করা যাবে, তাহলে তারা ভ্রান্তিতে আছে। ফিলিস্তিনের সন্তানদের চেয়ে আমার সন্তানদের রক্তের মূল্য বেশি নয়। ফিলিস্তিনের সকল শহীদ আমার সন্তান।’
পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় তিন ছেলে ও নাতি-নাতনি নিহত হওয়ার পর এসব কথা বলেন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রধান নেতা ইসমাইল হানিয়া।
হামাসের বর্ষিয়ান এই রাজনীতিক মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে যে হৃদয়গ্রাহী বক্তব্য দিয়েছেন তাতে গোটা বিশ্ব অভিভূত হয়েছে। তার এই বক্তব্যের সঙ্গে মুসলিম উম্মাহর অন্তরে হচ্ছে রক্তক্ষরণ।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, হামাসপ্রধান হানিয়ার ছেলেদের লক্ষ্য করে গাজার উত্তরপূর্বাঞ্চলের শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে হামলা চালানো হলে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
ছেলে ও নাতি-নাতনিদের মৃত্যুর বিষয়টি আল জাজিরাকে নিশ্চিত করে হানিয়া জানান, ইসরাইলি হামলায় কয়েকজন নাতি-নাতনিসহ তার তিন ছেলে হাজেম, আমির এবং মোহাম্মদ প্রাণ হারিয়েছেন। তবে সন্তানদের মৃত্যুতেও বিচলিত নন হামাসপ্রধান।
আল জাজিরাকে ইসমাইল হানিয়া জানান, শহীদদের রক্ত এবং আহতদের যন্ত্রণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিরা আশা তৈরি করে, ভবিষ্যৎ তৈরি করে, মানুষ ও জাতির জন্য স্বাধীনতা ও মুক্তি তৈরি করে।
তিনি আরও বলেন, ঈদ উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে গিয়েছিলেন তার ছেলেরা। ওই সময় হামলা চালানো হয়। নেতাদের বাড়িঘর ও পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে হামাসকে থামানো যাবে না বরেও ইসরায়েলি বাহিনীর প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
হামাসপ্রধান বলেন, কোনো সন্দেহ নেই এই শত্রুরা প্রতিশোধ, হত্যা এবং রক্তপাতে উদ্বুদ্ধ হয়েছে এবং তারা কোনো আইন মানে না। চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত তার পরিবারের ৬০ সদস্য নিহত হয়েছেন। ছেলেদের হত্যার মাধ্যমে যুদ্ধের গতিপথ বদলাবে না এবং হামাস যুদ্ধবিরতির দাবি থেকে একটুও সরে আসবে না বলেও তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
প্রসঙ্গত, আল শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে বেসামরিকদের বহনকারী একটি গাড়িতে ইসরায়েলি সেনারা বিমান থেকে হামলা চালায়। হানিয়ার পরিবার-পরিজন গাজাতে থাকলেও নিরাপত্তার কারণে তিনি কাতারে বসবাস করেন। সেখান থেকেই দলটির সব কার্যক্রম পরিচালনা করেন গাজার এই নেতা।