জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে কথার লড়াই চলছে প্রতিবেশী রাজ্য ভারতে। পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতাসীন বিজেপির কড়া সমালোচনা করে বলেন, বিজেপি আপনাদেরকে সকালে চায়ের সঙ্গে গোমূত্র ও দুপুরের গোবরের সঙ্গে কিছু একটা খাওয়াবে।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন বিজেপি মানুষের অধিকার হরণ করে নিচ্ছে। মানুষ কী খাবে, সেটাও আগামী দিনে বিজেপি ঠিক করে দেবে। যেমন বিজেপি বলবে, সেরকমই খেতে হবে।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) কোচবিহারের জনসভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান দাবি করেন, ক্ষমতায় ফিরে এলে সংশোধনী নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধির মাধ্যমে মানুষের অধিকার কেড়ে নেবে বিজেপি সরকার। মানুষ কী খাবেন, সেটাও ঠিক করে দেবে গেরুয়া শিবির।
মমতা বলেন, ‘আপনি কী খাবেন, লিখে দেবে সকালবেলায়। চা খাও। চায়ের সঙ্গে গোমূত্র খাও। আপনি কী খাবেন, লিখে দেবে দুপুরবেলায়। কী খাবে, গোবরের সঙ্গে মিশিয়ে কিছু খাও। সন্ধ্যায় কী খাবেন, সেটাও ওরা ঠিক করে দেবে। রাতে আপনি কত ঘণ্টা ঘুমাবেন, সেটা ওরা ঠিক করে দেবে।’
সোমবার কোচবিহারের সভা থেকে বিজেপিকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে মমতা বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন কাল কি ম্যানিফেস্টোয় (বিজেপির ইশতেহার) কী বলেছে?
আমি যেটা আগে বলি, পরে সেটা অনেকে বোঝে। যখন আমি আগে বলি, তখন আমায় ভুল বোঝে। ভাবে আমি ঠিক বললাম কিনা। বলেছিলাম, মাছের মাথাটা হচ্ছে ক্যা (সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন), আর লেজটা হচ্ছে এনআরসি (জাতীয় নাগরিকপঞ্জী)। মধ্যিখানের পেটিটা হচ্ছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। কাল ম্যানিফেস্টোয় রেখেছে, কি রাখেনি?’
মমতা আরও বলেন, ‘মনে রাখবেন, দেশ তো বেচে দিচ্ছে। বিজেপি যদি ক্ষমতায় আসে, আর এই আইন পাস করা হয়, তাহলে তফসিলি জাতির বন্ধুরা জেনে রাখুন যে আইডেন্ডেটি থাকবে কিনা, (তাহলে অধিকার থাকবে না)। বিজেপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে (অধিকার) থাকবে না। আদিবাসীদের অধিকার থাকবে না। সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব থাকবে না। হিন্দুদেরও থাকবে না। রাজবংশীদেরও থাকবে না।’
মমতা দাবি করেন যে পশ্চিমবঙ্গে জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সবরকমের উৎসব পালন করা হয়। সরকার কখনও কোনও উৎসব পালনে বাধা দেয় না।
মমতার কথায়, ‘যারা নবরাত্রি করেন, তাদের আমি শুভকামনা জানাই। আমাদের এখানে বাসন্তীপূজাও হয়, দুর্গাপূজাও হয়। বাসন্তীপূজা ছোট করে হয়। দুর্গাপূজা বড় করে হয়। বাসন্তীপূজা হয়, অন্নপূর্ণা পূজা হয়। নীলষষ্ঠী হয়, চৈত্র সংক্রান্তি হয়, ভাদু উৎসব হয়, বিহু উৎসব হয়। আমি সবাইকেই অভিনন্দন জানাই। ঈদ হয়ে গেল, বড়দিন হয়ে গেল। আগামী দিনে আরও উৎসব আসবে। ভাওয়াই উৎসব হয়।’