ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহতের পর নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে ফরিদপুরের মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়াও গাড়ির ফিটনেস ও চালকের লাইসেন্স না থাকলে ফরিদপুরে ঢুকতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার।
মহাসড়কে দুর্ঘটনা রোধে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকালে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘সড়ক নিরাপত্তা কমিটির সভায়’এসব কথা জানান জেলা প্রশাসক।সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, ফিটনেস ছাড়া গাড়ি ও লাইসেন্স ছাড়া কোনো চালক মহাসড়কে উঠতে পারবেন না। অন্যথায় ওই গাড়ি ও চালকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, ঈদের আগে সড়কে যে স্বস্তিদায়ক অবস্থা ছিল, ঈদের পরে বড় দুটি সড়ক দুর্ঘটনা পুরো মন্ত্রণালয়কে কাঁপিয়ে দিয়েছে। যার কারণে তারা খুবই অস্বস্তিতে আছেন এবং আমাদের উপরই চাপ এসে পড়েছে। প্রত্যেকটি দুর্ঘটনার পেছনেই স্বল্পগতির গাড়ির একটা ভূমিকা থাকেই। আমরা দ্রুত এই গাড়িগুলো বন্ধ করব।
চালক সুস্থ শরীর ছাড়া গাড়িতে উঠা যাবে না উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেখানেই মোবাইল কোর্ট নিয়ে যাবো সেখানে একজন চিকিৎসক থাকবে। সঙ্গে ডোপ টেস্ট, ডায়াবেটিস মাপার কীট এবং পেশার মাপার যন্ত্র নিয়ে যাবো। গাড়ি থামিয়ে চালকের প্রেসার, ডায়াবেটিস ঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হবে। সুস্থ শরীর ছাড়া গাড়িতে উঠা যাবে না, এটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। প্রেসার নিয়ে চালককে গাড়ি চালাতে দেয়া যাবে না।
কাগজপত্র ও ফিটনেস বিহীন কোনো গাড়ি ফরিদপুরে প্রবেশ করতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা সারাদেশে বার্তা দিতে চাই, ফরিদপুর পার হতে হলে চালকের ও গাড়ির ফিটনেস থাকতে হবে। সেই সঙ্গে প্রেসার ও ডোপ টেস্ট অবতীর্ণ হতে হবে। এগুলো করে ফরিদপুর হয়ে যেতে হবে। অন্যথায় প্রবেশ করতে পারবে না। আর না হয় আমরা গাড়ি ডাম্পিং করে ফেলবো।
জেলা প্রশাসক বলেন, সোহাগ, হানিফ ও ইউনিক পরিবহনের অধিকাংশ বাসের কাগজপত্র নেই। মাত্র ২৫% গাড়ির কাগজপত্র আছে। সোজা কথা কাগজপত্র বিহীন গাড়িগুলো ফরিদপুর দিয়ে চলবে না। এজন্য যাত্রীরা ভুগতে পারে। জীবিকার জন্য আমরা জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবো না। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কিছুটা অমানবিক ও কঠোর হতে হবে, আইন প্রয়োগ করতে হবে। অন্যথায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।
উল্লেখ্য, গেলো ১৬ এপ্রিল ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের তেতুলতলা দিকনগর এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৫ জন নিহত হন। এই দুর্ঘটনার পর সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা নিয়ে জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এএম/