আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ধর্মকে পুঁজি করে যারা মানুষ হত্যা করছে তাদের প্রতিরোধ করতে হবে : আইজিপি

ধর্মকে পুঁজি করে যারা মানুষ হত্যা করছে তাদের প্রতিরোধ করতে হবে : আইজিপি

ইসলামের নাম ব্যবহার করে গণহত্যা চালিয়ে ইসলাম ও মানুষকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ধর্মকে পুঁজি করে যারা মানুষ হত্যা করছে তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। বললেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ ।

রোববার (২৪ জুলাই)দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ‘ইসলামের দৃষ্টিতে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ ছাড়াও তিনি বলেন, সে প্রতিরোধ হবে ইন্টেলেকচুয়াল ও কালচারাল (চিন্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক) প্রতিরোধ। তবেই এই রোগ (জঙ্গিবাদ) থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

 ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, পৃথিবীতে ইসলাম ধর্মের বিপক্ষে ব্যাপক অপপ্রচার আছে। ইসলাম মানেই জঙ্গি এটা প্রচারের চেষ্টা করা হয়েছে। কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হয়েছে ইসলাম ও মুসলমানদের।

আইজিপি সোশ্যাল মিডিয়া ও ইউটিউবে যত্রতত্র ইসলামিক বক্তব্য প্রচার না করে মডারেটর থাকা উচিত বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এখন সোশ্যাল মিডিয়া ও ইউটিউবে প্রচারিত বক্তব্য কোনটা সঠিক কোনটা বেঠিক তা গুলিয়ে ফেলা খুবই সহজ। সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো মডারেটর নেই। কোনটা ঠিক কোনটা বেঠিক সেটা কে নির্ধারণ করবে? স্কলার, মাওলানাদের উচিত এসব বিষয়ে সঠিক বিষয়টি তুলে ধরা।

আইজিপি বলেন, এতদিন বেতের নামাজ পড়ে আসলাম মাগরিবের মতো। এখন অনেক, অজস্র ফতোয়া আছে। এখন নাকি মাঝে বৈঠক লাগবে না। ৩০/৪০ বছর ধরে যা পড়লাম তা কি ভুল পড়লাম?

আগে আমরা নামে কোরবানি দিতাম। এখন নাকি নামে কোরবানি হবে না। আল্লাহর নামে, মানুষ কুরবানি দেবে। ১৩০০ বছর ধরে কি তবে রঙ প্র্যাকটিস করলাম?

আমরা শুনেছি শেষ জামানায় প্রচুর ফেতনা হবে। কেয়ামত কবে হবে? এটা রাসূল (সা.)ও সঠিক করে বলেননি। তবে তিনি আলামত বলে গেছেন। ভ্রান্ত সমাজ সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সমাজে পর্দা প্রথায় হিজাব প্রচলিত আছে। আগে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা পড়তো, এখন ধনীরা পড়ে। ক্যাম্বেল হাম্বলের মতো হিজাব পড়ছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভালো ও সঠিক যেমন জানার সুযোগ হয়েছে, আবার বিভ্রান্তিরও সুযোগ তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, এসব নিয়ে কথা বলতে হবে। জঙ্গি, জিহাদ সম্পর্কে স্কলারদেরই সমাধান দিতে হবে। কিন্তু এখন স্কলারদের মধ্যেও দুটো দল। এক দল বলছেন, এসব আয়াত (১৬৪ জিহাদ-কিতালের) তাৎক্ষণিক পরিস্থিতির জন্য। আরেক দল বলছেন, সার্বজনীন। সব সময় প্রয়োগযোগ্য। তাহলে ১৬৪ জিহাদ কিতালের আয়াত সম্পর্কে মাওলানারা ব্যাখ্যা করুন।

ইরাকে, সিরিয়ায়, মিশরে মুসলমানদের ওপর যখন হামলা করা হচ্ছে, তখন মাওলানারা-স্কলাররা কথা বলছেন না? এমন প্রশ্ন রেখে আইজিপি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দায়েশ, আইএস, আল কায়েদা, আইসিএসের নামে লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এসব সংগঠন কারা জন্ম দিল? অর্থ, সংগঠন, অস্ত্র কোথায় থেকে আসল? সেটা সবাই জানি।

হলি আর্টিসান হামলার পর প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে জঙ্গিবাদের ঝামেলা চুকানো সম্ভব হয়েছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, যখন হলি আর্টিসানের ঘটনা ঘটে তখন অনেক কিছু করা হয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে বিদেশি অ্যাম্বাসিগুলো ডেঞ্জারাস বলে প্রচার পেল। কারা আসতে পারবে, কে আসতে পারবে না! ভয়াবহ চিত্র তখন। অনেক বিদেশি তাদের পরিবার-পরিজনকে নিজ দেশে পাঠিয়েছেন। অনেক দেশ কার্গো বিমান চলাচল বন্ধ করেছিল।

যদি আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ঝামেলা মেটাতে না পারতাম, তাহলে চট্টগ্রাম বন্দরও বন্ধ হয়ে যেতে পারত। মিডিয়া অপরিসীম ভূমিকা আছে। প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে জনগণের সমর্থন ও সহযোগিতা ছিল বলে।

পুলিশ প্রধান বলেন, তুষ্টির সুযোগ নেই। এখনও থ্রেট আছে। সারাবিশ্ব থেকে থ্রেট চলে গেলেও বাংলাদেশে থাকবে। কারণ এখানে থ্রেট থাকলেই চাপ তৈরি করা যায়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত আইজিপি মো. কামরুল আহসান। আর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিশেষ অতিথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আখতার হোসেন ও শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের গ্র্যান্ড ইমাম ফরীদ উদ্দীন মাসউদ।

এসআই/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ধর্মকে | পুঁজি | করে | যারা | মানুষ | হত্যা | করছে | তাদের | প্রতিরোধ | করতে | হবে | | আইজিপি