বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এণ্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)-কে একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। অনেক ভালো ব্যবসায়ী আছেন যারা আন্তর্জাতিক মানের পণ্য বাজারজাত করে বিশ্ব বাজারে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ী নামক এক ধরণের প্রতারকরা নকল পণ্য উৎপাদন করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। এ বিষয়ে বিএসটিআই’র সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সততা এবং নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
সোমবার (২০ মে) রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বিএসটিআই প্রধান কার্যালয়ে বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস-২০২৪ উপলক্ষে বিএসটিআই আয়োজিত ‘টেকসই ভবিষ্যৎ বির্নিমাণে আজকের পরিমাপ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএসটিআই’র মহাপরিচালক (গ্রেড-১) এস এম ফেরদৌস আলমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা ও এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ এক্রিডিটেশন বোর্ডের মহাপরিচালক, মুহাম্মদ আনোয়ারুল আলম, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম এনডিসি, ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) এর মহাপরিচালক মুহম্মদ মেসবাহুল আলম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট এর মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান, বিএসটিআই’র সাবেক মহাপরিচালক মো. মুয়াজ্জেম হোসাইন, সরদার আবুল কালামসহ শিল্প মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিবৃন্দ।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি পণ্য যেন দেশিয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সমাদৃত হয় আমরা সেভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বিএসটিআই সফলভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিএসটিআই’র অফিস ও ল্যাবরেটরি বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা যেন কোন ভাবেই হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে বিষয়ে লক্ষ্য রাখার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও উচিত বিএসটিআইকে তাদের কাজে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করা।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, বিএসটিআইকে শক্তিশালী করার জন্য সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিএসটিআইতে আরও বেশকিছু নতুন ল্যবরেটরি স্থাপিত হবে। এরফলে দেশে মানসম্ন্ন পণ্য উৎপাদিত হবে। এভাবে বিএসটিআইকে শক্তিশালী করে আমাদের রপ্তানি বাড়াতে হবে এবং আমদানি কমাতে হবে।
এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট বলেন, বিএসটিআই’র সক্ষমতা আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। সরকারের উচিত আরও নতুন নতুন যন্ত্রপাতি দিয়ে বিএসটিআইকে অত্যাধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা। বিএসটিআই সব সময় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করে থাকে। এভাবে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে সবাই মিলে কাজ করলে দেশ এগিয়ে যাবে।
বিএসটিআই’র উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে মহাপরিচালক বলেন, বিএসটিআই’র মানচিহ্ন নকল ও অবৈধ ব্যবহার প্রতিরোধে অনলাইন কিউআর কোড সম্বলিত লাইসেন্স প্রদান, পণ্যের হালাল সনদ প্রদান, স্বর্ণের বিশুদ্ধতা যাচাইপূর্বক সনদ প্রদান শুরু করেছে। মাঠ পর্যায়ে বিএসটিআই’র প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয় চালু, নতুন জনবল সৃজন, পণ্য পরীক্ষার জন্য আন্তর্জাতিকমানের নতুন নতুন ল্যাবরেটরি স্থাপন এবং বিদ্যমান ল্যবরেটরিসমূহে নতুন নতুন পণ্য পরীক্ষণ প্যারামিটার সংযুক্তিকরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি পণ্যের মান এবং ওজন ও পরিমাপ বিষয়ে বিএসটিআই’র প্রচেষ্টা বাস্তবায়নের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
এএম/