দেশের বিভিন্ন জেলায় আছে পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের জমি, রিসোর্ট। ব্যাংক, পুঁজিবাজারেও বিপুল পরিমাণ টাকা ছড়িয়ে রেখেছিলেন তিনি। এসব সম্পদ জব্দ করা হতে পারে এমন আভাষ পেয়ে নিয়েছেন অনেক অর্থ। নিজের অবৈধ অর্থ সম্পদ যথোপযুক্ত ব্যবহার করতে তথ্য গোপন করে সাধারণ পাসপোর্ট নিয়ে ঘুরেছেন দেশ-বিদেশে। সম্পদও করেছেন সেসব দেশে। অবসরে যাওয়ার পর তুরস্কে নাগরিকত্ব নিয়েছেন ৫ কোটি টাকায়। স্ত্রী জীশান মির্জার নামে সেকেন্ড হোম করেছেন স্পেনে। অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান শুরুর পর এমন তথ্য জানা গেছে।
প্রথম দিকে ঢাকা, গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরে কমপক্ষে ৬২১ বিঘা জমির সন্ধান পাওয়া যায় বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানের। এরপর গাজীপুর, কক্সবাজার, বান্দরবানেও বেনজীরের জমির খোঁজ পাওয়া যায়। কক্সবাজার এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপেও জমি কিনে রেখেছেন সাবেক এ আইজিপি।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেনজীরকে আগামী ৬ই জুন তলব করেছে দুদক। আর ৯ই জুন তার স্ত্রী ও দুই মেয়েকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে দুদক। কিন্ত তারা দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। কেউ বলছেন, বেনজীর দম্পত্তি সিঙ্গাপুরে আছে। কেউ বলছেন, দুবাইয়ে। আবার কেউ বলছেন তুরস্ক আছেন বেনজীর ও তার স্ত্রী সন্তানরা।
বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের নামে ৬২১ বিঘা জমির খোঁজ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ৫৯৮ বিঘা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ও মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায়। বেনজীর আহমেদ সেখানে সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক নামে একটি রিসোর্ট গড়েছেন।
বেনজীর একদিনেই ঢাকার গুলশানে চারটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। একটি তার স্ত্রী জীশান মির্জা এবং বাকি তিনটিই তিন মেয়ের নামে রেজিষ্ট্রি করেছেন। এসব ফ্ল্যাট কিনতে বেনজীর নামমাত্র মূল্য দেখিয়েছেন।
অন্যদিকে, উত্তরায় একটি সাততলা বাড়ি ও ভাটারায় একটি ছয়তলা বাড়ির মালিকও বেনজীর পরিবার। ভাটারার বাড়িটি দেশ ত্যাগের আগেই বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। উত্তরার সাততলা বাড়ির জমিটি রাজউক থেকে বরাদ্দ পেয়েছিলেন জীশান মীর্জার বাবা মনসুর আল-হক। সেই জমি মেয়েকে লিখে দেন তিনি। পরে একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা ঋণ নিয়ে সেখানে সাততলা বাড়ি বানিয়েছেন বেনজীর। দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, বাড়ি তৈরিতে আরও বেশী টাকা লেগেছে। সেই টাকার উৎস খোঁজা হচ্ছে।