সুপার এইটের দ্বিতীয় ম্যাচেও পরাজয়ের গ্লানি নিতে হলো বাংলাদেশকে। অস্ট্রেলিয়ার পর এবার ভারতের বিপক্ষে হারতে হয়েছে তাদের। প্রতিপক্ষের দেওয়া ১৯৭ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে বাংলাদেশ থেমেছে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৯৭ রানে।
ভারতের বিপক্ষে এই হারে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে টিকে থাকার স্বপ্ন শেষ হলো টাইগারদের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাকি থাকা একটি ম্যাচের ফল আর তেমন কোনো ব্যবধান রাখবে না বাংলাদেশের সমীকরণে।
স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে টসে জিতেছিল বাংলাদেশ দল। ভারতকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় তারা। আর ভারত সেই সুযোগে বড় লক্ষ্যমাত্রা ছুড়ে দেয় বাংলাদেশের সামনে। রান তাড়া করতে নেমে ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস কিছুটা থিতু হয়ে বাউন্ডারি বের করার চেষ্টায় ছিলেন।
লিটনও হাত খুলে শট খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে দলীয় ৩৫ রানে, হার্দিক পান্ডিয়াকে ছক্কা হাঁকানোর পরের বলে আবারও বড় শট খেলতে গিয়ে ফিরতে হয় তাকে। ১০ বলে ১৩ রানে বিদায় নেন এই ব্যাটার।
তানজিদ ও নাজমুল হোসেন শান্ত তখন ক্রিজে। তবে খেলছিলেন অনেকটা ধীরলয়ে। কুলদীপ যাদবের শিকার হয়ে তানজিদ ফিরেছেন ৩১ বলে ২৯ রান করে।
মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা কোনো সহায়তা করতে পারেননি। তাওহীদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, জাকের আলীরা হতাশ করেছেন। অধিনায়ক শান্ত ফিরেছেন জাসপ্রীত বুমরাহর শিকার হয়ে ৩২ বলে ৪০ রান করে।
শেষদিকে রিশাদ হোসেনের ব্যাটিং দেখে কিছুটা হয়তো উজ্জ্বল ছিল বাংলাদেশি দর্শকদের মুখ। এই ব্যাটার ৩ ছক্কা ও ১ চারে ১০ বলে ২৪ রান করে ফিরেছেন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ দল ধুঁকে ধুঁকেই হেরেছে এই ম্যাচ।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বেশ মারমুখী দেখা যায় ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা ও ভিরাট কোহলিকে। এরপর একে একে বাকি ব্যাটাররাও দাপট দেখিয়েছেন প্রতিপক্ষ বোলারদের ওপর। পাওয়ারপ্লেতে বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি ছাড়িয়ে যেতে থাকে রোহিত ও কোহলির শট।
প্রথম ৬ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৫৩ রান করতে সক্ষম হয় ভারত। রোহিতের উইকেটে কিছুটা স্থিরতা এসেছিল তাদের ব্যাটিংয়ে। ভারতীয় ওপেনার ফিরেছেন ১১ বলে ২৩ রান করে। তবে একপ্রান্তে কোহলি ঠিকই ব্যাট চালিয়ে যেতে থাকেন।
বাংলাদেশ দল শেখ মেহেদী হাসানকে বোলিংয়ে এনে ওভার শুরু করে। এর পরের ওভার দেওয়া হয় সাকিব আল হাসানকে। কিছুটা অবাক করেছে এই সিদ্ধান্ত।
সে যাইহোক, কোহলির উইকেট বগলদাবা করতে সক্ষম হয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব। ২৮ বলে ৩৭ রান করে ফিরে যান এই ব্যাটার। পরের ডেলিভারিতে সূর্যকুমার যাদবের কাছে ছক্কা খাওয়ার পর, এর পরের বলেই দারুণ এক এক্সট্রা বাউন্সে সূর্যকুমারকে ফিরিয়েছেন তানজিম।
তবে ততক্ষণে রিশাব পান্ট নিজেকে সাজিয়ে নিয়েছেন। থিতু হয়ে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে ওঠেন এই ব্যাটার। দারুণ সব শট খেলতে থাকেন। পান্টকে ফিরিয়েছেন রিশাদ হোসেন। আগ্রাসী হয়ে ওঠা পান্ট রিভার্স করে শট খেলতে যান, আর তাতে শর্ট থার্ডে দাঁড়িয়ে থাকা তানজিম সাকিবের হাতে ধরা পড়েন। পান্টের ব্যাটে আসে ২৪ বলে ৩৪ রান।
এরপর আবার কিছুটা ধীর হয় ভারতের রান। তবে তা বেশিক্ষণ থাকেনি। হার্দিক পান্ডিয়া ও শিভাম দুবে মিলে ফুঁসে উঠতে থাকেন। দুবে নিজের হাত খুলে ওভার বাউন্ডারি খেলছিলেন, রিশাদের ডেলিভারিতেই একটি ছক্কা হাঁকান, তার পরের বলেও বড় শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হন এই ব্যাটার।
৩ ছক্কায় দুবে ফিরেছেন ২৪ বলে ৩৪ রান করে।
বাকি কাজটুকু হার্দিক পান্ডিয়া একাই করেছেন, ফিরেছেন ফিফটি করে। নিজের জাত আরেকবার চিনিয়ে দিলেন এই ব্যাটার। ইনিংসের শেষ বলে বাউন্ডারি করে ফিফটি পূর্ণ করেন। মাঠ ছেড়েছেন ২৭ বলে ৫০ রান করে।