আওয়ামী লীগ

বিএনপি সরকারের কোনো সফলতা দেখে না : কাদের

বিএনপি সরকারের কোনো সফলতা দেখে না : কাদের
বিএনপি ও মির্জা ফখরুলরা কখনো বর্তমান সরকারের কোনো প্রকার সফলতা দেখে না। বিএনপির শাসনামলে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে এক ধরনের অনাস্থা ও অবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই আস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সোমবার (২৪জুন) আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিয়মমাফিক অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দের মুখে দেশের স্বার্থ নিয়ে কথা বড্ড বেমানান। তাদের নেত্রী খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ভারত সফরে গিয়ে গঙ্গার পানি চুক্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে ভুলে গিয়েছিল। অথচ জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেই ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পন্ন করে। এবারের সফরে এই চুক্তি নবায়নের বিষয়টিও উঠে এসেছে। সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের আমলে ভারত দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ দখল করে নিয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে দুই দেশের সীমানা জটিলতা নিরসনে সীমান্ত ও ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিসরে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিএনপির সময় ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তা দিতে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনা ঘটেছিল। ভারতীয় সন্ত্রাসীগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করার সুযোগ দেয়ায় দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কে অনাস্থা দেখা দিয়েছিল। বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় ভারত থেকে বাংলাদেশে পুশব্যাকের মতো ঘটনা ঘটেছিল। বিএনপি তো সেই দল যারা ভারতের নির্বাচনে বিজেপির জয়লাভের পর ভারতীয় দূতাবাসের দরজা খোলার আগেই অভিনন্দন জানাতে মিষ্টি ও ফুল নিয়ে হাজির হয়েছিল। কাদের বলেন, পরিতাপের বিষয় যে, তারাই আজ বাংলাদেশে ভারতবর্জন ও ভারতবিদ্বেষী রাজনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে। এটা তাদের চিরাচরিত দ্বিচারিতা ছাড়া আর কিছু নয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরে তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাই একমাত্র সরকারপ্রধান যিনি যে কোনো দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক দরকষাকষি করে বাংলাদেশের জনগণের মর্যাদাপূর্ণ স্বার্থ সুরক্ষিত করেছেন। বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের ভারতসহ অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে বিরাজমান অমীমাংসিত দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলোর শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সর্বদা দেশ ও জনগণের মর্যাদা এবং স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে সরকার পরিচালনা করেন। রাষ্ট্র পরিচালনায় অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্র যে কোনো নীতিতে তার প্রধান বিবেচ্য দেশের জনগণের স্বার্থ ও নিরাপত্তা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর ছিল অত্যন্ত চমৎকার, ফলপ্রসূ ও আন্তরিকতাপূর্ণ। এই সফরে দুই দেশের সম্পর্কের অগ্রগতি ও অর্জনগুলো স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। যেখানে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে এবং ১৩টি সুনির্দিষ্ট ঘোষণা এসেছে। মন্ত্রী বলেন, বিএনপি ও মির্জা ফখরুলরা কখনো বর্তমান সরকারের কোনো প্রকার সফলতা দেখে না। ভারত বাংলাদেশের বৃহৎ প্রতিবেশী রাষ্ট্র। বাংলাদেশের স্বার্থে ভারতের সঙ্গে কৌশলগতভাবে সম্পর্ককে জোরদার করতে হবে। শেখ হাসিনা এই সফরে তারই প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। বিএনপির শাসনামলে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে এক ধরনের অনাস্থা ও অবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই আস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। যার ফলে বাংলাদেশি রোগীদের জন্য ভারতের ই-মেডিকেল ভিসা চালুর সিদ্ধান্তে দুই দেশ ঐকমত্য হয়েছে। এতে বাংলাদেশের জনগণের ভোগান্তি কমবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, এছাড়া নতুন নতুন রুটে বাস-ট্রেন চালু এবং নতুন উপ-হাইকমিশন খোলার ঘোষণা দুই দেশের মানুষে-মানুষের সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে। তিস্তায় পানি বণ্টন ছিল এই সফরের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের কেন্দ্র সরকার ও রাজ্য সরকারের মধ্যে মতদ্বৈধতা রয়েছে। এই সমস্যা থাকার পরও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সুস্পষ্টভাবে তিস্তার পানি সংরক্ষণ প্রকল্প বিষয়ে কারিগরি সহায়তা দল পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন বিএনপি | সরকারের | কোনো | সফলতা | দেখে | | কাদের