আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

বাবুল আক্তারের কক্ষে তল্লাশি চালানো হয়নি: ওসি নিজাম

বাবুল আক্তারের কক্ষে তল্লাশি চালানো হয়নি: ওসি নিজাম

কারাগারে বন্দি আছেন  স্ত্রী মাহমুদা খানম ওরফে মিতু হত্যা মামলার আসামি চট্টগ্রামের সাবেক এসপি বাবুল আক্তার। সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে তার কারাকক্ষে তল্লাশি চালিয়েছেন ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)নিজাম উদ্দিন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাবুল আক্তারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে । 

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ফেনী মডেল থানার ওসি নিজাম উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেছেন, বাবুল আক্তারের কক্ষে তল্লাশি চালানোর বিষয়টি সঠিক নয়। 

তিনি বলেন, ফেনী থানার একটি ডাকাতি মামলার আসামি জেলে আছে নাকি নেই সেই তথ্য জানতে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। বাবুল আক্তার ঐ কারাগারে ছিলেন বা আছেন, এটা তার জানা ছিল না। 

এর আগে সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে বাবুল আক্তারের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ফেনী কারাগারে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের কক্ষে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিনের তল্লাশি চালিয়েছেন। এ ঘটনা তদন্ত করে বাবুল আক্তারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কারা সুপারকে নির্দেশ দিতে আদালতে আবেদন করা হয়।

গণমাধ্যমকে এ  বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোলাম মাওলা মুরাদ। তিনি বলেন, ফেনী কারাগারে বাবুল আক্তারের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে শুনানি হয়েছে। আদালত ১৯ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে আদেশ দেবেন।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর ১৫(১) ধারা এবং সংশ্লিষ্ট আইনের ৫(২) ধারায় পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন বাবুল আক্তার। এরপর থেকে আসামিরা মারমুখী হয়ে ওঠেন। আসামিদের নির্দেশে ও প্ররোচনায় ১০ সেপ্টেম্বর দুপুর আনুমানিক ১২টায় ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন জেল কোডের কোনো তোয়াক্কা না করেই ফেনী কারাগারে প্রবেশ করেন। এরপর বাবুল আক্তারের কক্ষে দীর্ঘসময় তল্লাশির নামে জীবনের ক্ষতি সাধনের চেষ্টা চালান।

কারাগারে তার প্রবেশের চিত্র সিসি টিভির ফুটেজ যাচাই করলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়েছে, জেল কোড অনুসরণ না করেই বন্দির কক্ষ তল্লাশির নামে জীবনের ক্ষতি সাধনের চেষ্টায় এ যাত্রায় সফল না হলেও আসামিরা যেকোনো সময় বাবুল আক্তার ও তার পরিবারের জীবননাশসহ যেকোনো ধরনের ক্ষতি সাধন করতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাবুল আক্তার।

আবেদনে আরও বলা হয়েছে, জেল কোড অনুসারে থানায় কর্মরত একজন পুলিশ কর্মকর্তা কোনোভাবেই জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং আদালতের লিখিত অনুমতি ছাড়া জেলখানায় প্রবেশ করতে পারেন না। অথচ আইন-আদালত ও প্রচলিত নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসামিদের বশে নিয়ে তাদের নির্দেশ অনুযায়ী বাবুল আক্তারের কক্ষ তল্লাশির নামে জীবনের ক্ষতি সাধন এবং তাকে মানসিকভাব দুর্বল করার চেষ্টা চালিয়েছেন। যা জেল কোড অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিষয়টি নিয়ে ‘কারাগারে বাবুল আক্তারের কক্ষে ওসির তল্লাশি!’ শিরোনামে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

এ অবস্থায় ঘটনার তদন্তপূর্বক অভিযোগকারীর (বাবুল আক্তারের) জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফেনী কারাগারের সুপারকে নির্দেশ দেওয়া জন্য আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

অন্যথায় বাবুল আক্তার ও তার পরিবারের জীবননাশসহ অপূরণীয় ক্ষতি ও ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

গত ৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে পিবিআই হেফাজতে থাকার সময় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দাবি করে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলার আবেদন করেন বাবুল আক্তার।

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন চট্টগ্রামের সাবেক এসপি বাবুল আক্তার।

অনন্যা চৈতী

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন বাবুল | আক্তারের | কক্ষে | তল্লাশি | চালানো | হয়নি | ওসি | নিজাম