আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামীর ফাঁসির আদেশ

স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামীর ফাঁসির আদেশ

ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে ফরিদা বেগম নামে এক গৃহবধূকে গলাটিপে হত্যার দায়ে তার স্বামীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মামলার পর তিন আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।   

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরিদপুরের নারী ও শিশু ট্রাইবুনাল, বিচারক জেলা ও দায়রা জজ প্রদীপ কুমার এ রায় ঘোষণা করেন। ওই সময় আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন, মো. সরোয়ার শেখ (৩৫)। তিনি মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের চুন্নু শেখের একমাত্র সন্তান। তিনি পেশায় ভ্যানচালক।  

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সরোয়ার শেখের মাতা ছাহেরা বেগম (৫৫) এবং মামা ওবায়দুল শেখ (৪৫) ও আলিয়ার শেখ (৬০)।

নিহত ফরিদা বেগম উপজেলার বাগাট গ্রামের রাশেদ শেখ ও মর্জিনা বেগমের বড় মেয়ে। ২০১৭ সালের ৬ জুলাই ফরিদার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর ১৩ দিন পরে ফরিদার মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে মধুখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে তার মেয়ে তাকে মোবাইলে ফোন করে জানায় ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য তার স্বামী তাকে মারপিট করছে। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি লোকের মাধ্যমে খবর পান তার মেয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মারা গেছে। দ্রুত তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন যে তার মেয়েকে জামাইয়ের বাড়ির বারান্দায় ফেলে রাখা হয়েছে। এসময় মেয়ের গলা ফোলা ও কাপড় পেঁচানোর দাগ দেখতে পান তিনি।

এ ঘটনার পর পুলিশ আলামত জব্দ করে লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় এবং মধুখালী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করে।

এদিকে, লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা যায় গৃহবধু ফরিদাকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ অবস্থায় আদালতে একটি নিয়মিত মামলা রুজু  হওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মনিরুজ্জামান ইতোপূর্বে দায়েরকৃত অপমৃত্যু মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন আদালতে।

মামলার পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে নিহতের গলায় চারটি আঘাতের চিহ্ন ছিলো। এতে তাকে গলাটিপে হত্যার কথা উল্লেখ করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষ আসামি সরোয়ার শেখের অপরাধ সুনিশ্চিতভাবে প্রমাণ হওয়ায় আসামিকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।

মামলায় আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নারায়ণ চন্দ্র দাস এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট স্বপন পাল।

কেএস 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন স্ত্রীকে | শ্বাসরোধে | হত্যার | দায়ে | স্বামীর | ফাঁসির | আদেশ