আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

মহেশখালীতে ক্যামেরা সংযুক্ত অতিথি পাখি উদ্ধার

মহেশখালীতে ক্যামেরা সংযুক্ত অতিথি পাখি উদ্ধার

মহেশখালী উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নে বিশেষ প্রযুক্তি সংযুক্ত একটি পাখি উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। পাখিটি নিয়ে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।

ধলঘাট ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বলেন, স্থানীয় এক ব্যক্তি ক্যামেরা সংযুক্ত পাখিটি দেখতে পায়, পাখিটির গায়ে ক্যামেরা দেখে লোকটি প্রথমে ভয় পেয়ে যায়। খবর পেয়ে লোক পাঠিয়ে পাখিটি ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসা হয়। পরে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন এবং উপজেলা বন বিভাগকে অবগত করা হয়।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে উপজেলা বন বিভাগ থেকে লোকজন আসলে ডিভাইসসহ পাখিটি তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। 

চট্টগ্রাম উপকূলীয় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রহমান জানিয়েছেন, গডবিট প্রজাতির এ পাখিটির গায়ে স্যাটেলাইট ট্র্যাক লাগানো কোনো বাংলাদেশি গবেষকের কাজ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাখিটি হাতে পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শীত মৌসুমে (২০২১-২২) বন বিভাগের অনুমতিক্রমে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মত নিঝুম দ্বীপে ১০টি ও টাঙ্গুয়া হাওরে ১০টি কালো লেজ জৌরালি (Black-tailed Godwit) প্রজাতির পাখির মধ্যে স্যাটেলাইট ট্র্যাকসহ ছেড়ে দেয়। পাখিগুলো কোনপথে, কত উচ্চতা ও কিভাবে হিমালয়ের মত বিশাল পর্বতমালা পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসে এবং ফিরে যায়? ‘পরিযায়ী পাখি’ নাম দিয়ে গবেষণা করে আসছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দিলীপ কুমার দাশ বিসর্গ। বর্তমানে পাখির পরিযায়ন নিয়ে নেদারল্যান্ডসের গ্রোনিংগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. মোস্তফা ফিরোজের নামে পাখিটির গবেষণার নাম দেওয়া হয়েছে ফিরোজ। এটি হিমালয় অতিক্রম করে চীন দেশ থেকে পরিযায়ন করে আবার বাংলাদেশে ফিরে এসেছে শীতকালীন সময় কাটানোর জন্য। আর এর মধ্যে পাখিটি দুর্বল হয়ে মহেশখালীর ধলঘাট দ্বীপে পড়ে গেলে স্থানীয়রা তা ধরেন।

মহেশখালী মাতারবাড়ি বিট কর্মকর্তা নুরে আলম জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক দিলীপ কুমার দাশ বিসর্গ পাখিটি নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি যোগাযোগ করেছেন। পাখিটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। পাখিটি ডিভাইসসহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান তিনি। 

এবিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দিলীপ কুমার দাশ বিসর্গ বলেন, ২০২১ সালে নিঝুম দ্বীপ থেকে ১০টি ও হাওর অঞ্চল থেকে ১০টি মোট ২০টি পাখির মধ্যে স্যাটেলাইট ট্র্যাক বসিয়ে গবেষণা করা হচ্ছিল। মূলত পাখিগুলো কোন কোন দেশে অবস্থান করে, কত উচ্চতায় উড়তে পারে আবারও বাংলাদেশে ফিরে আসে কিনা সেটা দেখা হচ্ছিল। পাখিটি হিমালয় হয়ে চীন দেশ অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসেছে। আরও কয়েকটি পাখি দেশে ফেরত আসছে, তবে অনেক পাখি ফেরত আসেনি বলে জানান তিনি।

মহেশখালী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, বিশেষ ডিভাইস সংযুক্ত পাখিটি নিয়ে বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন মহেশখালীতে | ক্যামেরা | সংযুক্ত | অতিথি | পাখি | উদ্ধার