আরজি কর কাণ্ডের ভয়াবহতা নাড়িয়ে দিয়েছে ভারতকে। তেমনই ১৯৯২ সালে আজমেঢ়ের ঘটনা সামনে আসার পর শিড়দাঁড়া দিয়ে ঠাণ্ডা স্রোত নেমে গিয়েছিল রাজস্থানে।
আজমেঢ়ের সেই গণধর্ষণ মামলায় ৩২ বছর পর ছয় অভিযুক্তকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনাল একটি পকসো আদালত।বিচারক রঞ্জন সিং অপরাধীদের ৫ লাখ টাকা করে জরিমানাও করেছেন। যা নির্যাতিতাদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হবে বলেও জানায় আদালত।
প্রথমে বন্ধুত্বের ফাঁদ, তারপর স্কুলছাত্রীদের ব্ল্যাকমেল করে দিনের পর দিন চলত গণধর্ষণ। মুখ বন্ধ করতে অশালীন ছবি তুলে করা হত ব্ল্যাকমেল। ১০০ জনেরও বেশি কিশোরীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত শহরের কুখ্যাত মস্তান ও যুব কংগ্রেসের নেতা ছিলেন ফারুখ এবং নাফিস। বাকিরা আজমেঢ় দরগার প্রভাবশালী।
এই ঘটনায় মোট ১৮ জন অভিযুক্তের নামে এফআইআর হয়েছিল। বাকিরা হয় সাজার মেয়াদ পার করে দিয়েছে, নয়তো আদালতে বেকসুর খালাস হয়ে গেছে। ১৪৫ জনেরও বেশি সাক্ষীর নাম ছিল। মাত্র ১৭ জন নির্যাতিতা তাদের বয়ান রেকর্ড করিয়েছিলেন। বেশিরভাগই আজমেঢ় ছেড়েছিলেন লোকলজ্জার ভয়ে।
১৯৯৮ সালে আজমেঢ়ের একটি দায়রা আদালত আট জন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনায়। কিন্তু রাজস্থান আদালত তাদের মধ্যে চার জনকে মুক্তি দেয়। যে ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা হয়েছে তারা হল- নাফিস চিস্তি, নাসিম ওরফে টারজান, সেলিম চিস্তি, ইকবাল ভাটি, সোহেইল গনি এবং সাইদ জামির হুসেন।
ফারুখ এবং নাফিস - জামিন পেয়ে এখনও আজমেঢ়ে বহাল তবিয়তে রয়েছে। দৈনিক নবজ্যোতি নামে এক আঞ্চলিক সংবাদপত্রে সাংবাদিক সন্তোষ গুপ্তা প্রথম এই সেক্স স্ক্যান্ডেলের খবর প্রকাশ্যে আনেন। যদিও এর সাজা তাকে পেতে হয়েছে। একবছর পর খুন হন তিনি।
প্রথমে বলা হয়েছিল আইএএস-আইপিএসের মেয়েরা এই নির্যাতনের শিকার। কিন্তু পরে জানা যায়, অনেক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েরা ছিলেন। অনেকের বাবা সরকারি চাকরি করতেন। ৩২ বছর পর নির্যাতিতারা এখন কারও ঠাম্মা কিংবা মা। তবু সেই কালো দিনের স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন আজও।
জেএইচ