জাতীয়

সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতের গ্রেপ্তার নিয়ে ধুম্রজাল

সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ছবি: সংগৃহীত

সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের  তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে একটি খবর ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা বা সংস্থা এর সত্যতা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করতে পারেনি। ফলে মোহাম্মদ এ আরাফাতের আটকের বিষয়টি নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।

এর আগে, মঙ্গলবাবর(২৭ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে তাকে  গ্রেপ্তার  করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছিলো। ওই সময় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রেপ্তারের তথ্য জানান। 

তবে এ বিষয়টি সত্য নয় জানিয়ে  ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার ওবায়দুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, তাদের কাছে মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে  গ্রেপ্তারের কোনো তথ্য নেই। ডিবিতে খোঁজ নিয়েছিলেন, সেখানেও  গ্রেপ্তারের কোনো তথ্য মেলেনি।

সপ্তাহ দুয়েক আগে মোহাম্মদ এ আরাফাত ও তার স্ত্রী শারমিন মুশতারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করতে সব ব্যাংককে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এক চিঠিতে ব্যাংকগুলোকে এ দুজনের নামে থাকা ব্যক্তিগত বা ব্যাবসায়িক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সব ধরনের টাকা তোলা বন্ধ করতে বলা হয়।

ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর  সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীকে জনসম্মুখে দেখা যায়নি। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর তার সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগসহ শরিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের দেশ ত্যাগের হিড়িক পড়ে যায়। অনেকেই পালিয়ে গেছেন। আর যারা পালাতে পারেননি তারা দেশের ভেতরে  আত্মগোপনে রয়েছেন। সবশেষ জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু গ্রেপ্তার হন। 

এরইমধ্যে গুঞ্জন ওঠে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত  ঢাকার ফরাসি দূতাবাসে লুকিয়ে রয়েছেন। পরে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় ঢাকার ফরাসি দূতাবাস জানায়, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ফরাসি দূতাবাসে লুকিয়ে আছেন, এমন গুজব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তবে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

মঙ্গলবার বিকেলে তিনি গ্রেপ্তার  হয়েছেন বলে বেশিরভাগ গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা এবিষয়ে সরাসরি মুখ থোলেননি। তাই বিষয়টি নিয়ে বেশ ধুম্রজাল তৈরি হয়। 

এরপর বিষয়টি নিয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আরাফতের বিষয়ে আপডেট জানতে মিডিয়া বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার ওবায়দুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, তাদের কাছে আপাতত মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে গ্রেপ্তারের কোনো তথ্য তার কাছে নেই।

প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আলোচনায় আসেন মোহাম্মদ এ আরাফাত। নির্বাচনে অংশ নিয়ে হামলার শিকার হয়েছিলেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী  হিরো আলম, যিনি ইউটিউবার হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন।  

আরাফাত দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের একজন থিংক ট্যাঙ্ক হিসেবে কাজ করছেন। তিনি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হন। মোহাম্মদ আলী আরাফাত একজন শিক্ষাবিদ। তিনি কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্ট্র্যাটেজিক ম্যানেজমেন্ট ও নীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ছিলেন।

এমআর//