দেশজুড়ে

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের কাছে জাতি আজীবন ঋণী : জামায়াত আমীর

বায়ান্ন প্রতিবেদন

জামায়াতে আমীর ডা. শফিকুর রহমান ছবি: কেএস//

আমার আফসোস এই যুদ্ধের শহীদদের মধ্যে আমি একজন হতে পারলাম না। এই সৌভাগ্য আল্লাহ যাদেরকে দান করেছে তাদের জন্য আমার ঈর্ষা হয়। এই আন্দোলনে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ আহত-নিহত হয়েছে। এই জাতি আজীবন তাদের কাছে ঋণী। বললেন বাংলাদেশ জামায়াতে আমীর ডা. শফিকুর রহমান। 

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের শহীদ পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

আমীরের জামায়াত বলেন, বিভিন্ন হাসপাতালে আহত ভাইদের দেখতে গিয়েছিলাম, কালিজা ফেটে গেছে। এক ভাইয়ের দুই চোখে গুলি লেগে অন্ধ হয়ে গেছে, সে তো আর এই দুনিয়ার আলো দেখবে না। এদের মা-বাবাকে আমরা কি শান্তনা দিবো। কত মায়ের বুক তারা খালি করে দিলো, একটা বারও কি তারা চিন্তা করলো না।

জামায়াতে আমীর আরও বলেন, রাজশাহী গিয়েছিলাম। শুনতে পারলাম, আন্দোলনে এক রিকশাচালক ভাই কলসিতে পানি ও গ্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের পানি খাওয়াতে বেড়িয়েছিল। এক পর্যায়ে হটাৎ পর পর তিনটা বুলেট তারা দেহ ভেদ করে চলে যায়। সে বিয়ে করেছিলো মাত্র এক বছর, তার স্ত্রী ৬ মাসের গর্ভবতী। সে আমাকে বললো, আমি নিজেকে নয়, আমি আমার গর্ভের সন্তান নিয়ে চিন্তিত। আমি বললাম, তোমাদের আল্লাহই পথ দেখাবেন। আর মানুষ হিসেবে আমরা পাশে থাকবো। প্রতিমাসে তোমাদের সম্মানের সহিত চলার মতো একটি অংশ তোমাদের কাছে পৌঁছে যাবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে বসেছিলাম। আমরা বলেছি, যেই পরিবারগুলোর আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন আপনারা তাদের সহযোগিতা করুন। আহতদের জন্য যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করুন, আমরা আপনাদের পাশে আছি।  বীরদের বীরত্বগাথা আমাদের পাঠ্যপুস্তকসহ সকল জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্থান করে দিতে হবে। এটা তাদের পরিবারের চাহিদা নয়, এটা আগামী প্রজন্মের চাহিদা। তারা যাতে জানতে পারে, তাদের পূর্বের যুবকরা জালেমের সামনে বুক পেতে দিয়ে দাড়িঁয়েছিল। তারা বলেছিলো, বুকের ভেতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর।

আমীরে জামায়াত বলেন, একটি জাতি যেখানে দাঁড়িয়ে যায়, কোনো স্বৈরাচার সেখানে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। সেই রাতগুলোতে অনেক অপকর্ম হয়েছে। যেমনটা হয়েছিলো ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে। সেই রাতের লাশগুলো কোথায় গেল? জানি না। আসুন, সকল শোককে আমরা শক্তিতে রুপান্তরিত করি।


কেএস//