এবার সামনে এলো আলোচিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কন্সট্রাকশনের নজিরবিহীন দুর্নীতির খবর। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে গত ১৬ বছরে রেলের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি লোপাট করেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা।
জানা গেছে, রাজবাড়ী-টুঙ্গিপাড়া রেলপথ প্রকল্প, পাবনা ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেলপথ, চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ, আখাউড়া-লাকসাম রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের মেয়াদ ও খরচ দফায় দফায় বাড়িয়ে তমা কন্সট্রাকশন লোপাট করেছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ। এই প্রকল্পেই বেশি লোপাটের চিত্র পাওয়া গেছে। এই রুটের ১০১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ২০১৬ সালে ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা। সেই প্রকল্প ১৮ হাজার কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। কিন্তু এখনও প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হয়নি।
তমা কন্সট্রাকশনসহ আরও কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভয়াবহ এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে প্রথম অনুসন্ধানে নামে দুদক। তখনকার অনুসন্ধান টিম তাদের বিরুদ্ধে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েল রেলপথ নির্মাণকাজের টেন্ডার ছিনতাই ও চীনা কোম্পানি চায়না লিমিটেডের কর্মকর্তাদের অপহরণের তথ্য-প্রমাণও পায়। কিন্তু শেষপর্যন্ত অদৃশ্য শক্তির ছোঁয়ায় তখন অনুসন্ধান আটকে যায়। মামলা তো দূরের কথা অনুসন্ধানটি নিষ্পত্তিও করা হয়নি।
এরপর গত বছরের ১৫ জানুয়ারি ফের অনুসন্ধানে নামে দুদক। গঠন করা হয় তিন সদস্যের কমিটি। এই কমিটিও তমা গ্রুপের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ভুয়া এলসি খুলে বিদেশে টাকা পাচারসহ বিভিন্ন অনিয়মের সন্ধান পায়। কিন্তু সেটিও আলোর মুখ দেখেনি। মূলত, দুদকের ভেতরে-বাইরে প্রভাবশালী মহলের তদবিরে অনুসন্ধান প্রতিবেদন এখনও আলোর মুখ দেখেনি।
ভয়াবহ এসব অভিযোগের বিষয়ে তমা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা না সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম সামছুল হক বলেন, রেলের দুর্নীতিবাজ সব ঠিকাদার ও তাদের দুর্নীতির ভাগিদার মন্ত্রী, সচিব ও রেল কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখনই সময়।
আই/এ