ঢাকা-নয়া দিল্লি আগের মতোই কাজ করছে। ভারতের সহযোগিতায় বাংলাদেশে চলমান প্রকল্পের কাজ চালু থাকবে। কোনো প্রকল্প বন্ধ হয়নি। কিছু প্রকল্পের ঠিকাদার ভারতে চলে গেলেও দ্রুত ফিরে এসে কাজ শুরু করবে। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞান প্রযুক্তিসহ আরও বড় প্রকল্পে ঢাকার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী নয়াদিল্লি। এমনটিই জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পতন ঘটে সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে আশ্রয় নেন ভারতে। বর্তমানে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের এই রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গঠিত হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। শেখ হাসিনার সরকারের সময় ঢাকা-দিল্লির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ছিলো খুবই মজবুত। ভারতের সহযোগিতায় বাংলাদেশে বড় ধরণের বেশ কয়েকটি প্রজেক্ট চলমান রয়েছে। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গুঞ্জন ওঠে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের হয়তো অবনতি ঘটবে। স্থগিত বা বন্ধ হয়ে যেতে পারে ভারতের সহযোগিতায় বাস্তবায়নের পথে থাকা বাংলাদেশের বড় প্রকল্পগুলো। তবে সব গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার জানালেন, চলমান প্র্রকল্পগুলোর কোনটাই বন্ধ হয়নি। হবেও না। বরং বিজ্ঞান-প্রযুক্তিসহ আরও বড় বড় প্রকল্পে ঢাকার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী নয়া দিল্লি।
মঙ্গলবার(১০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ ও বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মো সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে গণমাধ্যমের মুখো্মুখি হন ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা। এসময় উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরেন।
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থমন্ত্রণালয় ছাড়াও বিজ্ঞান প্রযুক্তিসহ আরও বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পের ব্যাপারে আমাদের আগ্রহ রয়েছে। এসব খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা ঘনিষ্টভাবে জড়িত আছি। আমাদের অনেকগুলো বড় ধরণের প্রজেক্ট চলমান রয়েছে।
প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, ‘অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে এটা আমার অবশ্যই প্রথম বৈঠক। এটি উপদেষ্টার সঙ্গে আমার প্রথম সৌজন্য সাক্ষাতও বটে। বাংলাদেশে চলমান ভারতের বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি-উন্নতির বিষয়ে তাকে অবহিত করেছি। সামনে আমরা কীভাবে অগ্রসর হবো তাও উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। ’
ভারতীয় কমিশনার আরও বলেন, ‘আমি উপদেষ্টাকে জানিয়েছি-বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে বড় ধরণের প্রকল্পে আমাদের আগ্রহ রয়েছে। এগুলো উপদেষ্টার মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে। আমি বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পের কথা বলেছি যেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসব প্রকল্প বাংলাদেশের নিজের জন্য খুবই লাভজনক এবং আমরা আনন্দিত এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছি।
পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে এসব প্রকল্প যাতে বাস্তবায়ন করা যায় তার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এটি আমাদের ইতিবাচক ও গঠনমূলক প্রয়াস।
এসময় ভারতের সহযোগিতায় বাংলাদেশের কয়েকটি বড় প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি তোলেন এক সাংবাদিক। জবাবে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন. ‘না, কোনো প্রকল্পই বন্ধ হয়ে যায়নি। বড় প্রকল্পগুলো চলমান রয়েছে। আমরা যেমনটি বলেছি-প্রকল্পগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর বিভিন্ন সাইট রয়েছে। ঠিকাদারের ছুটিতে ভোরতে গেছে। তারা ফিরে আসলেই প্রকল্পের বিভিন্ন সাইটের কাজ শুরু হবে। ’
ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারত সরকারের সম্পর্ক কীভাবে দেখছেন-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলন, ‘আমরা আন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে জড়িত। খুবেই ঘনিষ্টভাবে জড়িত। অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে সঙ্গে আমার এই সাক্ষাত তা প্রমাণ করে।’
এমআর//