আমদানি-রপ্তানি

ভারতে ইলিশ রপ্তানি নিয়ে সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত

বায়ান্ন প্রতিবেদন

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রথমে ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তা থেকে সরে এসেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশটিতে ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়েছে।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের প্রধান নিয়ন্ত্রককে চিঠি দিয়ে নতুন এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতির কথা জানানো হয়েছে। ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে এ অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪৮টি প্রতিষ্ঠান ৫০ টন করে ২ হাজার ৪০০ টন, আর একটি প্রতিষ্ঠান ২০ টন ইলিশ রপ্তানি করবে।

ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পাওয়ার জন্য আবেদনের শেষ সময় ছিল গেলো সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত। নতুন ও পুরোনো সব আবেদনপত্র এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ইলিশ রপ্তানির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। 

ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- আরিফ সি ফুডস, জারা এন্টারপ্রাইজ, সততা ফিশ ফিড, এস এ আর এন্টারপ্রাইজ, নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, রুপালী সি ফুডস লিমিটেড, লাকি এন্টারপ্রাইজ, টাইগার ট্রেডিং, রিপা এন্টারপ্রাইজ, জেবিএস ফুড প্রোডাক্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মাশফি অ্যান্ড ব্রাদার্স, মহিমা এন্টারপ্রাইজ, সেভেন স্টার ফিশ প্রসেসিং কোম্পানি লিমিটেড, রহমান ইমপেক্স, আসিফ ইমপেক্স, নোমান এন্টারপ্রাইজ, যমুনা অ্যাগ্রো ফিশারিজ, রুপালী ট্রেডিং করপোরেশন, সততা ফিশ, প্যাসিফিক সি ফুডস লিমিটেড, জেজে ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল, বিশ্বাস ইন্টারন্যাশনাল, ক্যাপিটাল এক্সপোর্ট ইমপোর্ট অ্যান্ড কোম্পানি, অর্পিতা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, সুমন ট্রেডার্স, সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজ, সততা ফিশ, আঁচল এন্টারপ্রাইজ, ২ এইচ ইন্টারন্যাশনাল, এমএপি ইন্টারন্যাশনাল, সরদার এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট, ইউভা ট্রেডিং, ফারিয়া ইন্টারন্যাশনাল, আসফা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, স্ট্যান্ডার্ড ফুড করপোরেশন, জেএস এন্টারপ্রাইজ, পদ্মা অ্যাগ্রো ফিশারিজ, ন্যাশনাল অ্যাগ্রো ফিশারিজ, মেসার্স আহনাফ ট্রেডিং, নাফিজা এন্টারপ্রাইজ, ডিপ সি ফিশারিজ লিমিটেড, মাসুদ ফিশ প্রসেসিং, আরকে ট্রেডার্স, বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজ, ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ ও লোকজ ফ্যাশন। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লোকজ ফ্যাশন ২০ টন, আর বাকি সবকটি প্রতিষ্ঠান ৫০ টন করে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন পেয়েছে।

ইলিশ রপ্তানির অনুমোদনের বিপরীতে আটটি শর্ত দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, অনুমতির মেয়াদ কার্যকর থাকবে আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত।

 যেসব শর্ত দিয়ে প্রতিবছর ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়, এবারও সেগুলোই রাখা হয়েছে। শর্তগুলো হচ্ছে বিদ্যমান রপ্তানিনীতির বিধিবিধান মানা, শুল্ক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ইলিশের কায়িক পরীক্ষা করানো এবং প্রতিটি চালান (কনসাইনমেন্ট) শেষে রফতানিসংক্রান্ত কাগজপত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা। এ ছাড়া অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি ইলিশ রপ্তানি না করা, অনুমতি কোনোভাবেই হস্তান্তর না করা এবং অনুমোদিত রপ্তানিকারক ছাড়া ঠিকায় রপ্তানি না করার শর্তও থাকছে। 

এর আগে গেলো ১১ আগস্ট মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছিলেন, ‘দেশবাসী ইলিশ পাবে না, আর বিদেশে রপ্তানি হবে, এটা হতে পারে না। আগে দেশকে গুরুত্ব দিতে হবে। এরপর রপ্তানি করা হবে।’

পরে গেলো ২১ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির কথা জানায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, বৃহত্তর স্বার্থে এবং সর্বোচ্চ মহলের সিদ্ধান্তে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানি করা হচ্ছে।

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ইলিশ