জুলাই মাসে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইবুনালে হাজির করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে, বেলা ১১টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষে প্রবেশ করেন চেয়ারম্যানসহ তিন বিচারপতি। চেয়ারম্যান হিসেবে ট্রাইব্যুনালে রয়েছেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার। পাশাপাশি সদস্য হিসেবে আছেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রথম দিন কাজে যুক্ত হওয়ার পর ট্রাইব্যুনালে পৌঁছে যোগদানপত্রে সই করেন তারা।
আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সংঘটিত গুম-হত্যা এবং সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে চালানো গণহত্যার বিচার করবে এই ট্রাইব্যুন্যাল।
ট্রাইব্যুনালে আসা ৫৬টি অভিযোগের মধ্যে ৫৪টিতেই প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, ১৮ নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেন আদালত। বিচারের অংশ হিসেবে গণহত্যা ঘিরে শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেয় ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিম।
ট্রাইব্যুনালের সূচনা বক্তব্যে বিডিআর বিদ্রোহে ৭৪ জনকে হত্যা, শাপলা চত্ত্বরে হেফাজতের সমাবেশে হত্যা, র্যাবের বিচার বহির্ভূত হত্যা, জুলাই-আগস্ট গণহত্যাসহ আওয়ামী শাসনামলে মানবতাবিরোধী অপরাধের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যা চালায়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। এরপর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিলে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এসি//