বাংলাদেশে এখন যেটা আছে সেটা সংবিধান নামে শেখ হাসিনার আবর্জনা। শেখ হাসিনার আবর্জনা ছাড়া আমি এই সংবিধানকে আর কিছু মনে করি না বলে মন্তব্য করেছেন, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, বর্তমান সংবিধানকে তিনি আবর্জনা বলছেন এ কারণে যে এই সংবিধানকে বিভিন্নভাবে বিকৃত করে এটিকে একটি ফ্যাসিবাদী দলিলে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এখন এই ফ্যাসিবাদী দলিল থেকে কোনো দিনও একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।
তিনি বলেন, ৭২ এর সংবিধানে যদি ফিরে যাওয়া হয় তাহলেও প্রশ্ন জাগে এটা কি জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করেছিল? এই প্রশ্নের উত্তর জনগণের কাছ থেকে কখনও খোঁজার চেষ্টা করা হয়নি। বলা হয়, ড. কামাল হোসেন এই সংবিধান রচনা করেছিলেন। কিন্তু জনশ্রুতি আছে, ওই সংবিধান ভারত থেকে তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল এবং তখনকার সরকার সংসদে এটাকে গ্রহণ করেছিল। এতে জনগণের কোনো মতামত বা পরামর্শ নেওয়া হয়নি।
সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল প্রধানতম গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য, যখন পাকিস্তানি শাসকরা বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায়কে অস্বীকার করলো এবং সেটাকে কেন্দ্র করেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। সেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে একটি স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা তৈরি করেছিলেন এবং ওই অবস্থায় সংবিধানকে রেখে গিয়েছিলেন। তারপর সংবিধানের আরো সংশোধন হয়েছে। জিয়াউর রহমান সাহেব এসে সেটাতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এনেছেন। তারপরে আল্লাহর প্রতি আস্থা এনেছিলেন, যেটাকে পরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু কোনো অবস্থাতেই জনগণের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সম্মিলিতভাবে সমাজ থেকে আওয়াজ তুলতে হবে, এই সংবিধান দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক ও নাগরিকে পক্ষে যায় এমন রাষ্ট্র বিনির্মাণ সম্ভব নয়৷ কাজেই রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য নতুন সংবিধান অবশ্যই রচনা করতে হবে। তবে সেই দায়িত্বটা নিতে হবে আগামীতে যে নির্বাচিত হবে তাদের। আর বর্তমান সরকারের দায়িত্ব হবে, এটার একটি সংস্কারের রূপরেখা তৈরি করে আগামী পার্লামেন্টের বিবেচনার জন্য রেখে যাওয়া। কারণ এই সরকার তো আর এই সংবিধান পরিবর্তন করতে পারবে না। কারণ তাদের সে ক্ষমতা নেই।
প্রসঙ্গত, কলামিস্ট ও শিক্ষাবিদ ড. আবদুল ওয়াহিদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আবদুল লতিফ মাসুম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিভাগের শিক্ষক ড. তারেক ফজলে।
আই/এ