জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, সারা দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে অনেকে রাজনীতি করছেন। আপনাদের এখন নেতা চেনার সময় এসেছে, কঠিন সময়ে কোন নেতাকে পেয়েছেন আর কোন নেতা আত্মগোপনে থেকে বা দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সুবিধা আদায় করেছেন।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার রয়েল রিসোর্টে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শিরোনামে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস বলেন, বিগত ১৬ বছরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অনেক নেতা ছিলো, যাদের আপনারা খুঁজে পান নাই, কিন্তু তারা নতুন করে বিভিন্ন রূপে বাংলাদেশে এসে আপনার মাথায় হাত বোলাচ্ছে। সময়মতো এরা আবারও আপনাদের ফেলে পালিয়ে যাবে। এই বাংলাদেশে চাঁদাবাজি ছিল, চাঁদাবাজি হচ্ছে; সিন্ডিকেট ছিল, সিন্ডিকেট হচ্ছে। এই সোনারগাঁয়ে আগে যে দখলদারি ছিল তার চেয়ে এখন বেশি হয়। এগুলো বন্ধ করতে চাইলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতা ক্ষমতামুখী না। ক্ষমতামুখী হলে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা যদি সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিৎ তাহলে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের তার বিপক্ষে কথা বলার মতো স্পর্ধা ছিল না। তারা ওই ৫ আগস্টে বিজয় নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে যত অংশীদার ছিল সবার সঙ্গে কথা বলে, তাদের মতামতের ভিত্তিতে এই উপদেষ্টামণ্ডলী হয়েছে। এখনো ছাত্ররা ক্ষমতাকে না, জনতাকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের অনেক প্রত্যাশা। এই প্রত্যাশা পূরণ যদি তারা না করতে পারে, দিন শেষে তাদের সঙ্গে অতীতের কোনো পার্থক্য পাওয়া যাবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে বাংলাদেশে একটি গণ–অভ্যুত্থান হয়েছে। খুনি হাসিনা ভয়ে লেজ গুটিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। কিন্তু এই খুনি হাসিনা এবং তার কিছু সুবিধাভোগী দালাল দেশের বাইরে থেকে উসকানি দিচ্ছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা সারজিস আলম বলেছেন, আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা ও স্বচ্ছ নির্বাচন হতে হবে। এতে কোনো রাজনৈতিক দল যদি ৩০০ আসনও পায়, আর কেউ যদি কিছু না পায়, তাতেও কোন আপত্তি থাকবে না। কিন্তু এই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে নির্বাচন হতে হবে। যদি এই নির্বাচনকে সামনে রেখে যেকোনো শক্তি, পক্ষ বা গোষ্ঠী বিন্দুমাত্র ক্ষমতার অপব্যবহার করার চিন্তা করে, কোনো নির্বাচনী কেন্দ্র প্রভাবিত করার চেষ্টা করে, তাহলে ওই কেন্দ্রটিই হবে আরেকটি অভ্যুত্থানের ক্ষেত্র।
এ আয়োজনে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য তুহিন মাহমুদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত শাকিল আহম্মেদ, শহীদ মেহেদী হাসানের বাবা সানাউল্লাহ প্রমুখ।
আই/এ