ভৌগলিক সুবিধা নিয়ে আঞ্চলিক ও বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলোর সাথে বানিজ্য স্থাপন করা যায় তাহলে বাংলাদেশকে আটকে রাখার ক্ষমতা কারও নেই বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন’ আয়োজিত বার্ষিক সম্মিলনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা মহা সৌভাগ্যবান একটি জাতি তার অবস্থানের কারণে। সেই জাতির দুঃখ কেন লাগবে, আমি বুঝতে পারি না। আজকে কুমিরা থেকে টেকনাফ পর্যন্ত যে উপকূল ভূমি, সেখানে যদি কাতারে কাতারে নৌবন্দর স্থাপন হয়, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত দুনিয়ার সব জাহাজকে আশ্রয় দিতে পারি, তাদের কাজ করার জন্য সুযোগ সুবিধা দিতে পারি, আমাদেরকে আটকাবে কে?’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উত্তরে নেপাল, ভূটান। তাদের দুর্ভাগ্য হল তাদের সমুদ্র নেই। কিন্তু বাংলাদেশের আছে। ভারতের সেভেন সিস্টার্সেরও একই দুর্ভাগ্য। কিন্তু বাংলাদেশ যদি তাদেরকে নিজেদের দেশের ভেতর দিয়ে বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দেয়।তারা অর্থের বিনিময়ে নিজেদের পণ্য আনা নেয়া করে। তাহলে তাদের অর্থনীতি বাংলাদেশের অর্থনীতি একসঙ্গে জাগবে। তারাও খুব কষ্টকর অবস্থায় আছে, ভালো অবস্থায় নাই। এই সুযোগ পেলে তারাও আনন্দিত হবে। একইসঙ্গে রমরমা ব্যবসা হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের উত্তরে সেই বিখ্যাত হিমালয় পর্বতমালা, যেখানে জমে আছে আমাদের জগতীয় শক্তি ‘হাইড্রোপাওয়ার’। কত শক্তি দরকার বাংলাদেশের। এখানে সব জমা আছে, হারিয়ে যাচ্ছে না, শুধু নেওয়ার অপেক্ষায়। শুধু প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক করা যাতে নেপাল এবং বাংলাদেশের মধ্যে যে দূরত্ব আছে, সেটা অতিক্রম করার’।
ভারতকে ইঙ্গিত করে ড. ইউনূস বলেন, ‘আশা করি, তাদেরই অর্থনৈতিক কারণে সেটা আমাদেরকে দেবে। এটা সবার মঙ্গলের জন্য। একজনের উপকার আরেকজনের অপকার এমন কিছু না। যদি আমরা সেই পথ খোলা পাই, বাংলাদেশকে আটকে রাখার ক্ষমতা কারও নাই’।
তিনি আরও বলেন, ‘কাজেই প্রাকৃতিক দিক থেকে আমরা খুবই সৌভাগ্যবান। তার চেয়ে বড় সৌভাগ্য যে, আমাদের মস্ত বড় জনসংখ্যা। আগে মনে করতাম বোঝা মনে হয়। এটা সম্পদ, মানবসম্পদ। প্রযুক্তি আসার ফলে দেশের মানুষ আর বোঝা নয়। প্রতিটি মানুষ এখন সম্পদ। আমরা সেই সম্পদে সম্পদশালী’।
আই/এ