আসছে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থাকবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত তাদেরকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা ঢাকায় তার সরকারি বাসভবনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন 'আওয়ামী লীগকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা। তাদের সিদ্ধান্ত আমি নিতে পারবো না। কারা অংশগ্রহণ করবে তা নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়।'
ড. ইউনূস জানিয়েছেন, গেলো বছর আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে যখন তাকে নতুন সরকারের দায়িত্ব নিতে বলা হয়, তখন সে চমকে ওঠে।
তিনি জানিয়েছেন, সরকার পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা না থাকলেও তাকে পরিস্থিতি বুঝে ঠিক ভাবে কাজ করতে হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নবগঠিত সরকার স্থির হয়ে গেলে আমরা অন্যান্য দিকে নজর দেই। যার মধ্যে— আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করা এবং অর্থনীতি ঠিক করা দেশের জন্য অগ্রাধিকার ছিল।‘
তিনি বলেন, ‘শান্তি ও শৃঙ্খলার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস অর্থনীতি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার রেখে গিয়েছে এক ছিন্নভিন্ন অর্থনীতি, বিধ্বস্ত অর্থনীতি। এটা এমন কিছু যেন ১৬ বছর ধরে ভয়ানক টর্নেডো হয়েছে এবং আমরা এখন বিধ্বস্ত টুকরোগুলো তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছি।‘
আসছে জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করবে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার কত দ্রুত সংস্কার করতে পারে তার ওপর নির্বাচনের এই সময়সীমা নির্ভর করছে। কারণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এসব সংস্কারক প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি আমাদের ইচ্ছা মতো দ্রুত সংস্কার করা যায়, তাহলে ডিসেম্বরে আমরা নির্বাচন করতে পারবো। আর যদি সংস্কারের পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের আরও কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।’
বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘গেলো বছরের একই সময়ের সাথে তুলনা করলে এখন আইনশৃঙ্খলা ঠিক আছে। এখন যা ঘটছে, তা অন্য সময়ের চেয়ে আলাদা বা ভিন্ন কিছু নয়।‘
বর্তমান দুর্দশার জন্য আগের সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, `আমরা কোনও আদর্শ দেশ বা আদর্শ শহর নই। এই অবস্থা হচ্ছে দেশের ধারাবাহিকতা যা আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। এটা এমন একটি দেশ যেখানে এসব বহু, বহু বছর ধরে চলছে।'
মার্কিন এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের অর্থায়নকৃত কর্মসূচি বন্ধের ব্যাপারে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা তাদের সিদ্ধান্ত। এটি ভালোই হয়েছে। কারণ তারা এমন কিছু করছে যা আমরাই করতে চেয়েছিলাম, যেমন দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং এর মতো আরও জিনিস, যা আমরা কখনোই ঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারিনি।’
এমএ//