জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, আমরা দেখেছি আমাদের বোনেরা যখন রাজপথে আন্দোলন করেছে তখন সবাই সমর্থন করেছে। কিন্তু তারা যখন রাজনীতিতে আসছে তখন তাদের নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমরা দলের পক্ষ থেকে স্পষ্টকরে বলতে চাই, আমরা আমাদের বোনদের এই অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে যেমন সামনের সারিতে পেয়েছি, আগামীর রাজনীতিতে পলিসি মেকিংয়েও সামনের সারিতে দেখতে চাই।
শনিবার (৮ মার্চ) নারীর নিরাপত্তার দাবিতে বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এনসিপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি একথা বলেন।
সারজিস বলেন, নারীদের নিয়ে এমন ভাবার সুযোগ নেই যে, তাদের যখন প্রয়োজন হয় ব্যবহার করবো আর প্রয়োজন না হলে নিয়ে অপপ্রচার চালাবো।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মা-বোনদের যতটুকু সেফ অনুভব করার কথা এই মুহূর্তে ততটুকু নিরাপত্তা এই সরকার তা নিশ্চিত করতে পারছে না। আমরা গণঅভ্যুত্থানে দেখেছি, প্রত্যেকটা মিছিলের সামনের সারিতে আমার বোনেরা ছিল। যখন আমাদের মিছিলের সামনে একশ’ জন বোন দাঁড়িয়ে যেতো তখন আমারা কয়েক হাজার ভাইয়ের থেকে বেশি সাহস পেতাম। এই একশ’ জন নারীই কিন্তু খুনি হাসিনার রেজিমে কাপন ধরিয়ে দিয়েছিল।’
নারী নির্যাতনের সাম্প্রতিক ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমরা দেখছি, মাগুরার ছোট্ট বোন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। শকুনদের দৃষ্টি থেকে আমাদের বোনদের রক্ষা করা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও কীভাবে একজন বোনের ওপর এক লোক তার মতাদর্শ চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। পোশাক নিয়ে যেভাবে ইচ্ছা কথা বলেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে দলের পক্ষ থেকে বলি, রাষ্ট্র এক জিনিস, ধর্ম আরেক জিনিস। রাষ্ট্রকে সব ধর্মকে ধারণ করতে হয়। সব চিন্তা-ধারার মানুষকে ধারণ করতে হয়। এখানে একজন মানুষ চাইলেই তার রীতি-নীতি, বিশ্বাস অন্যজনের ওপর চাপিয়ে দিতে পারে না।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, বাংলাদেশে নারী নেতৃত্ব তৈরিতে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসন এখন আর কোনও ভূমিকা রাখবে না। যোগ্যতার ভিত্তিতে নারীরা নির্বাচিত হবে। গত ৫৩ বছরে নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কোনও কাজ করা হয়নি। একটি আধুনিক রাষ্ট্রে নাগরিকের যে মর্যাদা নিশ্চিত করার কথা তা কখনও হয়নি। অভ্যুত্থানের ফ্যাসিবাদী কাঠামো বিলোপ হয়নি।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, ‘আমরা কখনও নারী দিবস ভালো মনে পালন করতে পারি না। দেশে ধর্ষণ দৈনন্দিন ঘটনায় রূপ নিয়েছে। ধর্ষণ যেন রাস্তাঘাটে শিশুদের মারামারি। এনসিপি নারীর সব নাগরিক ও মানবিক মর্যাদা শিকার করে। পাশাপাশি সমান অধিকার নিশ্চিতে কাজ করবে। সামনের দিনেও এনসিপি গুরুত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে কাজ করে যাবে। যারা সহিংসতার শিকার হয়েছে এনসিপি তাদের বিচার দাবি করবে।’
আই/এ