দ্বিতীয় স্ত্রী কিরন রাওয়ের সঙ্গে ২০২১ সালে ডিভোর্সের আড়াই বছর পর বলিউড পাড়ায় গুঞ্জন রটে যায়, আবারও প্রেম করছেন সুপারস্টার আমির খান। কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুর একটি মেয়ের সঙ্গে প্রায়ই তাকে বিভিন্ন স্পটে দেখা যেতো। তারাপরও সম্পর্ক নিয়ে কোনোদিন মুখ খোলেননি বলিউডের মিস্টার পারফেক্টশনিস্ট খ্যাত অভিনেতা আমির খান। তবে এবার আর গোপন রাখতে পারলেন না। ভার্সেটাইল অভিনেতা এবার নিজেই নতুন প্রেমের কথা স্বীকার করলেন। আর ভক্ত অনুরাগীদের জানিয়ে দিলেন ভবিষৎ পরিকল্পনার কথা।
আজ শুক্রবার(১৪ মার্চ) ৬০ বছরে পা রাখছেন আমির খান। এ উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন বলিউডের চকলেটবয়’খ্যাত নায়ক আমির খান। সংবাদ সম্মেলনে আমির খান তার প্রেমিকা গৌরিকে মিডিয়ার সামনে পরিচয় করিয়ে দেন।
এসময় অভিনেতা বলেন, গৌরি আর আমি ২৫ বছর আগে দেখা করেছি এবং এখন আমরা একসঙ্গে। আমরা একে অপরের প্রতি খুবই সিরিয়াস এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা দেড় বছর ধরে সম্পর্কে আছি। গেলো বৃহস্পতিবার তার মুম্বাইয়ের বাড়িতে শাহরুখ খান ও সালমান খানের সঙ্গে গৌরির পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান আমির খান। গৌরি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য জানিয়ে আমির বলেন, গৌরি প্রোডাকশনে কাজ করেন। আমি প্রতিদিন ওর জন্য গান গাই। এসময়, নিজের অভিনীত লগন সিনেমার ভুবনের প্রসঙ্গ টেনে আমির খান বলেন, ‘ভুবনকে তার গৌরি অবশেষে পেয়ে গেছে। সিনেমাটিতে গ্রেসি সিং গৌরির চরিত্রে অভিনয় করেন। এতে গৌরি ভুবনের প্রেমে পড়েছিলেন।
বিয়ের ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আমির খান বলেন, আমি জানি না ৬০ বছর বয়সে বিয়ে আমার জন্য ঠিক হবে কি না। তবে আমার সন্তানরা খুব খুশি। আমি খুবই ভাগ্যবান যে আমার প্রাক্তন স্ত্রীদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক এত ভালো।
প্রসঙ্গত, আমির খানের প্রথম স্ত্রী ছিলেন রীনা দত্ত। আমিরদের ঠিক পাশের বাড়ির মেয়ে ছিলেন রীনা দত্ত। ছোট থেকেই তাই একসঙ্গে বড় হয়ে ওঠা তাঁদের। এক সময়ে একে অপরের প্রেমে মশগুল ছিলেন তাঁরা। পরিবারের বিপক্ষে গিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়েও করেন। তা সত্ত্বেও দীর্ঘ ১৬ বছরের দাম্পত্য জীবনে ইতি টানেন দু’জনে। ৫০ কোটি টাকার বিনিময়ে বিবাহবিচ্ছেদে রাজি হন দু’জন। সে সময় বলিউডের অন্যতম দামি ডিভোর্স ছিল এটিই।
১৯৮৬ সালে ১৮ এপ্রিল রীনার সঙ্গে আমিরের বিয়ে হয়। ২০০২ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। তবে তাঁদের বিচ্ছেদ নিয়ে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা সামনে আসেনি। বরং আমির আজও প্রাক্তন স্ত্রী রীনাকে যথেষ্ট সম্মান দিয়েই কথা বলেন। রীনার কথাবার্তাতেও আমিরের প্রতি সম্মান প্রকাশ পায়।
জুনেইদ এবং ইরা নামে দুই সন্তানের জন্ম দেন রীনা। আমিরও কেরিয়ারে উন্নতি করতে শুরু করেন। প্রীতি জিন্টার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে চর্চা শুরু হয়। রীনার কানে সেই খবর পৌঁছলে সম্পর্কে কিছু জটিলতা তৈরি হয়।
তবে জটিলতা বাড়তে দেননি কেউই। আমির এবং রীনা দু’জনেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সমাধান করে ফেলেছিলেন। পরে ‘লগন’ সিনেমার শ্যুটিংয়ের সময় সহপরিচালক কিরণ রাওয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় আমিরের। কিরণ ছিলেন ওই ফিল্মের সহকারী পরিচালক। কিরণের সঙ্গে আমিরের খুব ভাল বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল।
তত দিনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রীনার সঙ্গে তাঁর দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকত। তার উপর কিরণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাও মানতে পারতেন না রীনা। শেষে ২০০২ সালে দু’জনে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেন।
ডিভোর্সের পর কিরণের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়তে থাকে এবং ২০০৫ সালে তাঁকে বিয়ে করেন আমির। কিন্তু সে বিয়েও ভেঙে যায় ২০২১ সালে। তবে তারা একসঙ্গে ছেলে আজাদের কো-প্যারেন্টিং চালিয়ে যাচ্ছেন।
এমআর//