কুমিল্লার লাকসামে এক গৃহবধূকে (১৯) দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর পরিত্যক্ত বাড়িতে। পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে দিনভর অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের উদ্ধৃত্তি দিয়ে পুলিশ জানায়, নোয়াখালীর সোনাপুর এলাকার এক তরুণী ও তার স্বামী গত ১৩ মার্চ লাকসামে তার নানা শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ১৪ মার্চ ভোরে লাকসাম বাইপাস মোড় থেকে বাড়ি ফেরার জন্য তারা একটি সিএনজিতে ওঠেন। সিএনজিচালক মো. মাসুদ তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। এরপর কৌশলে তাদের লাকসামের গন্ডামারা এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে অভিযুক্তরা তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে এবং পরিকল্পিতভাবে লালমাই উপজেলার মগবাড়ি এলাকায় নিয়ে যায়। পরে স্বামীকে ফেলে রেখে ওই গৃহবধূকে অপহরণ করে।
পুলিশ জানায়, ভিকটিমকে লাকসামের বড়তুফা এলাকায় সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অভিযুক্ত মো. মাসুদ ও মোহাম্মদ আলী তাকে ধর্ষণ করে। পরে ভিকটিমকে লাকসাম পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের তালুকদার ভিলায় অভিযুক্ত বিলকিছ আক্তার কল্পনার ভাড়া বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাকে আবারও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। এরপর তারা মা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে লাকসাম থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- লাকসাম উপজেলার মনোহরপুর এলাকার মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আলী (২৫), পৌরসভার শ্রীপুর মধ্যপাড়ার মো. মমিনের ছেলে মো. মাসুদ (২৩), বাতাখালী এলাকার আবু তাহেরের ছেলে মনির হোসেন হৃদয় (২৩), উত্তর বিনই এলাকার মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আল আমিন (২৩) এবং মধ্য লাকসাম এলাকার মৃত মোস্তাফিজ মজুমদারের স্ত্রী বিলকিছ আক্তার কল্পনা (৪০)।
লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা জানান, ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগ পাওয়ার পরই দ্রুত তদন্ত শুরু করা হয়। পুলিশ রোববার দিনভর অভিযান চালিয়ে পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। এরপর সোমবার সকাল ১০টার দিকে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গেলো বছরের ৫ আগস্ট বিক্ষুব্ধ জনতা ওই বাড়িতে হামলা চালানোর পর থেকেই সেখানে কেউ বসবাস করছে না। বর্তমানে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
এসি//