বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিলসের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক এবং ইনস্টাগ্রামে ছোট ছোট ভিডিওগুলোর আধিপত্য এখন সকলের চোখে পড়ছে। রিলস শুধুমাত্র তরুণদের মধ্যেই নয় বরং সব বয়সী মানুষের কাছে এখন এটি এক অত্যন্ত জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে রিলস দেখা অনেকেরই অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে ঘুমানোর আগে একটানা রিলস দেখা কেবল মানসিক নয়, শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় জানা গেছে, গড়ে ৪,৩১৮ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে যারা রাতে ঘুমানোর আগে রিলস দেখেন, তাদের মধ্যে হাইপারটেনশনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। চীনের হেবেই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই দুটি বিষয়ের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। তাদের মতে, বিশেষ করে তরুণ ও মধ্যবয়সীদের মধ্যে এই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
এছাড়াও দীর্ঘসময় ধরে রিলস দেখা মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। করোনাকালে শর্ট ভিডিওগুলোর জনপ্রিয়তা বাড়ার পর জেন-জি ও জেন আলফা প্রজন্মের মনোযোগ ধরে রাখা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। এর ফলে সৃজনশীল চিন্তা এবং গভীর মনোযোগের অভাব দেখা দিয়েছে। তবে ঘুমানোর আগে রিলস দেখা আরো ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
স্ক্রীনের দিকে দীর্ঘ সময় তাকিয়ে থাকা, সেটা টেলিভিশন দেখা, ভিডিও গেম খেলা বা কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা সবই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বিছানায় শুয়ে একটানা রিলস দেখার সময় শরীরের কোনো গতি থাকে না। এই অবস্থায় শরীর আড়ষ্ট হয়ে পড়ে,রক্ত সঞ্চালন ধীর হয়ে যায় এবং হাইপারটেনশনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই সঙ্গে শরীরের সিম্পেথেটিক নার্ভাস সিস্টেমও বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে, যার ফলে হৃদস্পন্দন বাড়ে।
গবেষকদের মতে, রিলস দেখুন তবে তা যেন আসক্তির পর্যায়ে না পৌঁছায়। ঘুমাতে যাওয়ার আগে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার ব্যাপারে সময় সীমিত করা উচিত। প্রয়োজনে ফোনটি দূরে রেখে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা ভালো। এতে শরীর ও মন দুটোই বিশ্রামের সাথে মানসিক শান্তি পাবে এবং ঘুমের মানও উন্নত হবে।
এসকে//