লাইফস্টাইল

হাঁটার জন্য সঠিক জুতা: পায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস

লাঈফস্টাইল

ছবি: সংগৃহীত

নিয়মিত হাঁটা আমাদের শারীরিক সুস্থতার জন্য একটি অত্যন্ত উপকারী অভ্যাস।  তবে হাঁটার জন্য সঠিক জুতা নির্বাচন করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।  কারণ এটি শুধুমাত্র হাঁটার অভিজ্ঞতাকে আরামদায়ক করে না বরং , পায়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনেও সাহায্য করে।  সঠিক ওয়াকিং শু পরলে আপনি শুধু হাঁটার সময় আরাম পাবেন না , পাশাপাশি পায়ের ব্যথা, ফোলাভাব এবং আঘাতজনিত সমস্যা থেকেও রক্ষা পাবেন।

যেকোনো হাঁটার জন্য সঠিক জুতা পরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ , কারণ এটি পায়ের আকার , গঠন এবং প্রয়োজনীয় সাপোর্টের সাথে পুরোপুরি মানানসই হতে হবে।  সঠিক জুতা আপনাকে হাঁটার সময় আরামদায়ক অনুভূতি দেবে , পাশাপাশি দীর্ঘসময় হাঁটার ক্ষেত্রে পায়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ থেকে মুক্ত রাখবে।

শু নির্বাচন :

সঠিক সাইজ নির্বাচন করুন:

পায়ের আকার অনুযায়ী সঠিক সাইজের জুতা নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খুব টাইট বা ঢিলেঢালা জুতা হাঁটার সময় অস্বস্তি তৈরি করতে পারে। জুতার সামনে কিছুটা জায়গা রাখা উচিত, যাতে হাঁটার সময় পায়ের আঙুলে কোনো চাপ না পড়ে।

জুতার ওজন:

হাঁটার জন্য হালকা জুতা সবচেয়ে উপযুক্ত , কারণ এটি আপনার পায়ে অতিরিক্ত চাপ তৈরি না করে সহজে চলাচল করতে সাহায্য করে।

সোলের গঠন ও গুণমান:

আউটসোল (নিচের অংশ): রাবারের তৈরি জুতা ভালো , কারণ এটি ভালো গ্রিপ দেয় এবং পিছলে যাওয়ার সম্ভাবনা কম রাখে।  ননস্লিপ ডিজাইন থাকার ফলে এটি রাস্তার সাথে ভালোভাবে সংযুক্ত থাকে।

মিডসোল (মাঝের অংশ): ইভা (EVA) ফোম বা জেল কুশনযুক্ত মিডসোল হাঁটার সময় পায়ের শকের প্রভাব কমায় এবং দীর্ঘসময় হাঁটার জন্য আরাম প্রদান করে।

ইনসোল (ভেতরের অংশ): নরম কুশনযুক্ত ইনসোল হাঁটার সময় পায়ের তালুর ওপর চাপ কমিয়ে দেয় এবং হাঁটার অভিজ্ঞতাকে আরও আরামদায়ক করে তোলে।

অ্যাঙ্কেল এবং আর্চ সাপোর্ট:

যাদের পায়ের আর্চের গঠন বিশেষ ধরনের (অধিক বাঁকা বা কম বাঁকা) , তাদের জন্য বিশেষ আর্চ সাপোর্ট খুবই জরুরি।  এটি গোড়ালি এবং হাঁটুকে সুরক্ষা দেয় এবং দীর্ঘসময় হাঁটার সময় পায়ের কোনো সমস্যা তৈরি হতে দেয় না।

শ্বাসপ্রশ্বাসের ক্ষমতা:

জুতার উপরের অংশে এমন উপাদান থাকা উচিত যা বাতাস চলাচল করতে সাহায্য করে , যেমন জালযুক্ত বা ক্যানভাস।  এটি পায়ের ঘাম শোষণ করে এবং পা ঠান্ডা ও আরামদায়ক রাখে। 

হিলের উচ্চতা:

ওয়াকিং শুর হিল খুব বেশি উঁচু বা নিচু হওয়া উচিত নয়।  সাধারণত ০.৫ থেকে ১.৫ ইঞ্চি হিল হাঁটার জন্য আদর্শ।  পুরোপুরি সমান (ফ্ল্যাট) জুতা পরা থেকে বিরত থাকুন।  কারণ এটি পায়ের চাপ কমাতে সাহায্য করে না।

বাঁকানোর সুবিধা:

একটি ভালো ওয়াকিং শু এমন হওয়া উচিত , যাতে এটি সহজে বাঁকানো যায়।  শক্ত ও অনমনীয় জুতা হাঁটার জন্য উপযুক্ত নয় , কারণ এটি হাঁটার সময় অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।

লেইস বা ভেলক্রো (চিপকানো ফিতা):

হাঁটার জুতা এমন হওয়া উচিত যাতে এটি পায়ে ফিট থাকে।  লেইস বা ভেলক্রো স্ট্র্যাপ ব্যবহার করলে জুতাটি ভালোভাবে আটকানো থাকে এবং হাঁটার সময় এটি খোলার ঝুঁকি থাকে না।

স্থায়িত্ব এবং গুণগত মান:

দীর্ঘস্থায়ী ভালো ব্র্যান্ডের জুতা বেছে নেওয়া উচিত।  এতে জুতা সহজে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না এবং দীর্ঘসময় ব্যবহার করা যায়।

বিশেষ ধরনের জুতা:

১.যদি আপনি প্লান্টার ফ্যাসাইটিস বা হিল স্পার সমস্যায় ভোগেন , তবে আর্চ সাপোর্ট এবং হিল কুশনযুক্ত জুতা বেছে নিন।

২. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নরম এবং সেলাইবিহীন ইনসোল গুরুত্বপূর্ণ , যাতে পায়ের ত্বকে কোনো ক্ষত না হয়।

৩. ফ্ল্যাটফুট থাকলে বিশেষ আর্চ সাপোর্ট যুক্ত জুতা নির্বাচন করুন।

সঠিক ওয়াকিং শু নির্বাচনের মাধ্যমে আপনি শুধু হাঁটার অভিজ্ঞতাকে আরামদায়ক করবেন না বরং , পায়ের স্বাস্থ্যও সুরক্ষিত রাখবেন।  সঠিক জুতা পরলে দীর্ঘসময় হাঁটার পরেও আপনি ক্লান্ত বা ব্যথা অনুভব করবেন না।  হাঁটার সময় আরামের পাশাপাশি পায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সঠিক জুতা পরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

এসকে// 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন হাঁটার | জন্য | সঠিক | জুতা | পায়ের | জন্য | গুরুত্বপূর্ণ | টিপস