দেশের সেনা সর্বাধিনায়ক (চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বা সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহানের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। রোববার বিকেলে রাজনাথের দিল্লির বাসভবনে পৌঁছে যান সেনা সর্বাধিনায়ক। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সেখানে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয় তাদের। সংবাদ সংস্থা এএনআই’র বরতা দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, পহেলগাঁওয়ে বন্দুক হামলার পরে পাকিস্তানকে জবাব দিতে কী কী গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে দুজনের। তবে ওই আলোচনার কোনও তথ্য এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসেনি। দিল্লীর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার আবহে গেলো তিন দিন ধরে কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গুলিবর্ষণ শুরু করেছে পাক সেনা। পাকিস্তানের এক মন্ত্রী আবার ১৩০টি পারমানবিক অস্ত্র ভারতের দিকে তাক করা রয়েছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সেনা সর্বাধিনায়কের সঙ্গে রাজনাথের বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
পহেলগাঁও কাণ্ডে ভারতের গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, হামলাকারীদের মধ্যে শুধু দুজন স্থানীয় ছিল। বাকি সকলেই পাকিস্তানি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে পাকিস্তান। এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে ভারত এবং পাকিস্তান উভয়েই একে অন্যের বিরুদ্ধে বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপ করেছে। তার মধ্যে অন্যতম, পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধুচুক্তি স্থগিত করে দেওয়া। ইসলামাবাদ জানিয়েছে, জলপ্রবাহ আটকানোর চেষ্টা হলে তা ‘যুদ্ধ’ হিসাবে দেখা হবে। পাকিস্তান জানিয়েছে, তাদের শিমলা চুক্তি স্থগিত করার অধিকার রয়েছে।
বস্তুত, এই চুক্তির মাধ্যমেই কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা নির্ধারিত হয়েছিল। চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল, জম্মু ও কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতির সময়ে যে দেশের বাহিনী যেখানে অবস্থান করছে, সেখানেই অবস্থান করবে। কোনও দেশই একতরফা ভাবে নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করবে না। চুক্তিতে বলা হয়েছিল, জম্মু ও কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতির ফলে যে নিয়ন্ত্রণরেখা নির্ধারিত হয়েছে, ভারত এবং পাকিস্তান, উভয় পক্ষই তা মেনে চলবে। পারস্পরিক মতপার্থক্য সত্ত্বেও কোনও পক্ষ একতরফা ভাবে এর পরিবর্তন চাইবে না। এই রেখা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে হুমকি বা বলপ্রয়োগ থেকে উভয় পক্ষ বিরত থাকবে।
দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের এই কূটনৈতিক আঘাত এবং প্রত্যাঘাতের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে অন্য দেশগুলিও। পহেলগাঁও কাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ দ্বন্দ্বে মধ্যস্থতার কোনও আকাঙ্ক্ষা নেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের। তাঁর কথায়, ‘‘ভারত এবং পাকিস্তান নিজেরাই কোনও না কোনও ভাবে এই সমস্যার সমাধান করবে।’
জেএইচ