আলো ঝলমলে সেটে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে যেন এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। প্রয়াত অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা সাইনা চট্টোপাধ্যায় সদ্য পা রেখেছেন রূপালী পর্দায়। ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ ধারাবাহিক দিয়ে ছোটপর্দায় তার অভিনয়যাত্রার সূচনা। আর তাতেই নজর কেড়েছেন দর্শক।
কিন্তু স্টারডমের আলোয় ভেসে যাওয়ার বয়স এখনো হয়নি সাইনার। কারণ এই অভিনেত্রী এখন মাত্র দশম শ্রেণির ছাত্রী। দিনভর ১৪ ঘণ্টা টানা শুটিং আর স্কুলের পড়াশোনা দু’দিক সামলাতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠছিল এই কিশোরী। চাপ বাড়ছিল দিনকে দিন। সন্তানের মুখে ক্লান্তির ছাপ, চোখে ঘুমহীনতা দেখে শেষমেশ কঠিন এক সিদ্ধান্ত নিলেন মা সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায় ‘হোম স্কুলিং’ এর পথে হাঁটবেন তারা।
সংযুক্তা জানালেন, খুব কঠিন ছিল সিদ্ধান্তটা। কিন্তু মুম্বইয়ের কিছু বন্ধু পরামর্শ দিল হোম স্কুলিং করানোর জন্য। পরে খোঁজ নিয়ে বুঝলাম ব্যবস্থাটা বেশ ভালো। সন্তানকে কোনও চাপ না দিয়েও ওর পড়াশোনার খেয়াল রাখা যায়।
প্রথাগত ক্লাসরুম আর নির্দিষ্ট সময়ের বাঁধনে নয় হোম স্কুলিং এর জগৎ আলাদা। এটি এমন এক পদ্ধতি, যেখানে কোনও নির্দিষ্ট স্কুলে না গিয়ে, শিক্ষার্থী নিজের সময় ও প্রয়োজন অনুযায়ী অনলাইনে বা বাড়িতে পড়াশোনা করে। বিদেশি বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই পদ্ধতিতে পড়ালে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিলেই যথেষ্ট। চাপের ভারে নুয়ে না গিয়ে, শিক্ষার্থীরা নিজের ইচ্ছা, প্রতিভা ও শখ পূরণের সুযোগ পায়।
আর এখানেই খুশি সাইনা। মা সংযুক্তার কথায়, আমি চাই না, মেয়ের উপর কোনও চাপ থাকুক। অভিনয়ের প্রতি ওর ভালবাসা দেখেই বোঝা যায়, বাবার পথেই ও এগোবে। তাই হোম স্কুলিং ওর জন্য শ্রেষ্ঠ পথ বলে মনে হয়েছে।
ছোট বয়সেই বাবার ছায়া হারিয়েছেন সাইনা। কিন্তু অভিনয়ের প্রতি তার আকর্ষণ যেন বাবারই রক্তে মিশে থাকা ভালোবাসারই উত্তরাধিকার। সংযুক্তা বলেন, সব কিছুই যেন অভিষেক করিয়ে নিচ্ছে। আমি শুধু পাশে থেকে এগিয়ে দিচ্ছি।
রূপালী পর্দার এই নতুন মুখ পড়াশোনা আর অভিনয় দুটোকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে সামলাচ্ছেন এখন। তবে ভবিষ্যৎ যেন আরও উজ্জ্বল, আরও স্বপ্নময় হয় এই কামনাই করেন তার পরিবার, ভক্তরা এবং পুরো ইন্ডাস্ট্রি।
এসকে//