আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে বিচার শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে। বেশ কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ-আন্দোলন এবং ছাত্র-জনতার দাবির মুখে অবশেষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।
শনিবার (১০ মে) রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, আজকের(শনিবার) সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাস বিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে। এ ছাড়া বৈঠকে জুলাই ঘোষণাপত্র আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে।
এর আগে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না পাওয়ায় ‘মার্চ টু যমুনা’ ঘোষণা দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে সাতটার দিকে রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে হাসনাত আবদুল্লাহ এ ঘোষণা দেন। পরে রাত পৌনে নয়টার দিকে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব জাহিদ আহসান বলেন, যেহেতু আগের দেওয়া সময়সীমার মধ্যে সরকারের ঘোষণা আসেনি, তাই শাহবাগ থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে রাজসিক মোড়ে এখন অবস্থান নেবেন তাঁরা। জাহিদের এই ঘোষণার পরপর শাহবাগে অবস্থান করা জমায়েত যমুনার অদূরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকে এগোতে থাকে।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে এক ঘণ্টার মধ্যে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) চেয়ে সময়সীমা বেঁধে দেন হাসনাত। ওই সময় তিনি বলেন, এক ঘণ্টার মধ্যে পথনকশা না পেলে ‘মার্চ টু যমুনা’ (অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন) ঘোষণা।
এরও আগে, শুক্রবার (৯ মে) প্রথম প্রহরে মিছিল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান করেছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। এর আগে, সেখানে রাত ১০টার পর থেকেই অবস্থান করেন এনসিপি মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহসহ কয়েক শ নেতা-কর্মী।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত যমুনার সামনে থেকে তাঁরা সরবেন না।
আই/এ