বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ চলছে এবং আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী এই পরিস্থিতি আরও কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে। এমন সময় গরমের তীব্রতা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে অসহনীয় করে তুলছে। এই সময় শরীরের সুস্থতা বজায় রাখতে সঠিক খাবারের নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গরমে কিছু খাবার শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে এবং সুস্থ থাকতে সহায়তা করে, আবার কিছু খাবার আছে যেগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
যা খাবেন-
১) পানি: গরমে শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সবচেয়ে জরুরি হল পানি পান। চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন প্রতিদিন ২.৫ থেকে ৩ লিটার বিশুদ্ধ পানি খেতে। বাইরে বের হলে পানির বোতল সঙ্গে রাখুন, এবং স্যালাইন বা লবণ-চিনির পানি পান করলে শরীর আরও ভালো থাকবে।
২) চিঁড়া, দই ও কলা: সকাল বেলা নাস্তা হিসেবে চিঁড়া, দই ও কলা একত্রে খাওয়া শরীরকে ঠাণ্ডা রাখবে এবং পুষ্টির চাহিদাও পূরণ করবে। বিশেষ করে যারা আইবিএস (ইরিটেবল বাউয়েল সিনড্রোম) এ ভুগছেন, তাদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী।
৩) ফল: গরমে বিভিন্ন ধরনের ফল পাওয়া যায়, তবে শসা, তরমুজ, আনারসের মতো জলীয় ফল বেশি খাওয়া উচিত। এই ফলগুলো শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে এবং আর্দ্রতা বজায় রাখে।
৪) পুদিনা পাতা: পুদিনা পাতা গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করে। পুদিনা দিয়ে রস বা চাটনি তৈরি করে খেলে শরীর ঠাণ্ডা থাকবে এবং গরমের দিনে পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন অম্বল, বদ হজম থেকে রেহাই মিলবে।
৫) টক দই: গরমে দই অত্যন্ত উপকারী। সকালে অথবা দুপুরে টক দই খাওয়া শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং হজমের প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে।
৬) পাকা পেঁপে ও বাঙ্গি: গরমের দিনে পাকা পেঁপে ও বাঙ্গি খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। এগুলোতে রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রোপার্টি, যা কোষ্ঠকাঠিন্য, অম্বল, বদ হজম, পেট ফাঁপা দূর করতে সহায়তা করে। সকালে বা বিকেলে এক বাটি পাকা পেঁপে ও বাঙ্গি খেলে শরীর ঠাণ্ডা থাকবে।
যা খাবেন না-
১) তেল-মশলাদার খাবার: গরমে অতিরিক্ত তেল ও মশলা যুক্ত খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলুন। ভাজা পোড়া, পুরি, সিঙ্গারা, সমুচা, তেলে ভাজা খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং হজমেও সমস্যা তৈরি করতে পারে।
২) চা ও কফি: চা বা কফি গরমের দিনে শরীরের পানিশূন্যতা সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং, চিনি ও দুধ দিয়ে চা বা কফি খাওয়া গরমের সময় পরিহার করা উচিত।
৩) মাংস: ভারী মাংস জাতীয় খাবার গরমে খাওয়া থেকে বিরত থাকা ভালো। তার পরিবর্তে কম তেল ও মসলা দিয়ে রান্না করা মাছ ও সবজি তরকারী খাওয়া উচিত।
৪) চিনিযুক্ত শরবত ও স্মুদি: অতিরিক্ত চিনিযুক্ত শরবত, রাস্তার ধারের রঙিন শরবত বা স্মুদি গরমের সময়ে এড়িয়ে চলুন। এতে শরীরের সমস্যা আরও বাড়তে পারে এবং অতিরিক্ত চিনির কারণে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে।
গরমে শরীরের সুস্থতা বজায় রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাবারের নির্বাচন আপনাকে শুধু ঠাণ্ডা রাখবে না, শরীরের শক্তিও বজায় রাখতে সাহায্য করবে। সুতরাং, খাদ্য তালিকায় উপরের সুপার ফুডগুলো যোগ করুন এবং গরমের কষ্ট থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পান।
এসকে//