সুন্দরবনের বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী মান্দারবাড়িয়া চরে ফেলে যাওয়া ৭৮ জনের মধ্যে ৭৫ জন জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নাগরিককে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর জন্মসূত্রে ভারতীয় নাগরিক দাবি করায় বাকি তিনজনকে শ্যামনগর থানায় মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) শ্যামনগর থানা চত্বরে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এই তথ্য জানান কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান।
তিনি বলেন, সুন্দরবন থেকে উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদের পর উদ্ধারকৃতরা জানান ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদ ও সুরাট এলাকার বিভিন্ন বস্তিতে তারা শ্রমজীবী হিসেবে বসবাস করতেন। গত ২৬ এপ্রিল রাতে ভারতীয় পুলিশ তাদের ঘরবাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় এবং পরিবারের সামনে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। পরে চোখ বেঁধে সামরিক বিমানে চড়ে তাদের আলাদা জায়গায় স্থানান্তর করা হয়। এরপর জাহাজে করে বাংলাদেশের জলসীমায় এনে নামিয়ে দেয়া হয়।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রনী খাতুন বলেন, গত ১১ মে রাতে কোস্টগার্ডের কাছ থেকে উদ্ধারকৃতদের গ্রহণ করে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ। সোমবার কাগজপত্র প্রস্তুত না হওয়ায় হস্তান্তর সম্ভব হয়নি। পরে মঙ্গলবার ৭৫ বাংলাদেশিকে আত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, ভারতীয় নাগরিক দাবি করা তিনজন হলেন খুলনার বটিয়াঘাটা থানার ফুলবাড়িয়া গ্রামের খালিদ শেখের ছেলে আব্দুর রহমান (২০), নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বিষ্ণুপুর গ্রামের মৃত মুন্না সাহার ছেলে মো. হাসান শাহ (২৪) ও একই গ্রামের সোহেল শেখের ছেলে সাইফুল শেখ (১৯)। তাদের কাছে কোনো বৈধ ভারতীয় কাগজপত্র না থাকলেও তারা জন্মসূত্রে গুজরাটের নেহেরীনগর এলাকার বাসিন্দা বলে দাবি করেছেন। তাদের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, উদ্ধারকৃত ৭৮ জনের মধ্যে নড়াইল জেলার ৬৭ জন, খুলনার ৬ জন, যশোরের ২ জন এবং সাতক্ষীরা, ঢাকা ও বরিশালের একজন করে রয়েছেন।
আই/এ