আন্তর্জাতিক

৪০ রোহিঙ্গাকে নিয়ে সাগরে ফেলে দিলো ভারত!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ছবি: প্রতীকী ছবি

৪০ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সাগরে নিয়ে গিয়ে ফেলে দিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী। এমনই গুরুতর অভিযোগ তুলেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা। শনিবার (১৭ মে) মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জোর করে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আরও কঠোর করেছে ভারত। এরই অংশ হিসেবে, ৬ মে দিল্লি থেকে আটক করা হয় একদল রোহিঙ্গাকে, যাদের চোখ বেঁধে নেওয়া হয় প্রায় ১৫০০ মাইল দূরের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। 

সেখান থেকে নৌবাহিনীর একটি জাহাজে তুলে সাগরের দিকে যাত্রা করে। তানিনথারি উপকূলে পৌঁছানোর পর তাদের লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে সাগরে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করা হয়।

ভুক্তভোগীদের একজন জানান, চোখ ও হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দিয়ে ভারতীয় সেনারা তাদের জলে ঝাঁপ দিতে বলে। প্রায় আধাঘণ্টা সাঁতার কাটার পর এক জেলে তাদের উদ্ধার করে মিয়ানমারের একটি দ্বীপে নিয়ে যায়।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার আইনজীবীরা বলছেন, ভারত আটক রোহিঙ্গাদের সংবিধান অনুযায়ী আদালতে হাজির না করেই ফেরত পাঠিয়েছে, যা দেশের আইন লঙ্ঘনের শামিল।

২০১৭ সালে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা। ভারতে ঢোকে প্রায় ২২ হাজার, যাদের শরণার্থী হিসেবে চিহ্নিত করে জাতিসংঘ।

তবে ভারত সরকার শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে এসেছে। দেশটির আইনেও শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুযোগ নেই, ফলে রোহিঙ্গাদের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ভারতের বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন পিইউসিএল জানায়, সাগরে ফেলে দেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে কিশোর, প্রবীণ এমনকি ক্যানসার রোগীও ছিলেন। যদিও ভাগ্যক্রমে সবাই বেঁচে যান, তবে অনেকেই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রুজ বলেন, ‘নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে শরণার্থীদের সাগরে ফেলে দেওয়ার ঘটনা নৃশংসতার শামিল। আমি এই ঘটনার বিষয়ে আরও তথ্য ও সাক্ষ্য সংগ্রহ করছি এবং ভারত সরকারকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি।‘

এমএ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #রোহিঙ্গা #ভারত