লাগাতার রুশ হামলায় নাজেহাল ইউক্রেন। কয়েকদিনের হামলায় মারা গেছে দেশটির ১৬জন বেসামরিক নাগরিক। একের পর এক ভূখণ্ড দখল করে নিচ্ছে রাশিয়া। এমন অবস্থায় কিয়েভকে অত্যাধুনিক টরাস মিসাইল দিবে জার্মানি। বিশেষজ্ঞদের মতে, জার্মানির এই অত্যাধুনিক মিসাইল ঘুরিয়ে দিতে পারে যুদ্ধের মোড়। সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে মস্কো ও ইউরোপ।
কয়েকদিন আগে জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ফ্রেড্ররিখ মার্জের সঙ্গে বৈঠক করেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। সেখানেই কিয়েভকে টরাস মিসাইল দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মার্জ। যা দিয়ে মস্কোতে আঘাত হানতে পারবে ইউক্রেন।
ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা স্কাই নিউজ জানিয়েছে, জার্মানি ও সুইডেন যৌথভাবে অত্যাধুনিক টরাস কেপিইডি-৩৫০ মিসাইল বানিয়েছে। জার্মান মিসাইল কোম্পানি এমবিডিএ ডয়েচেল্যান্ড ও সুইডেনের সাব বোফর্স ডাইনামিক্সের বানানো এই মিসাইল দিয়ে ৫০০ কিলোমিটার দুরুত্বে আঘাত হানা যায়। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এই মিসাইল ১৪০০ কেজি বিস্ফোরক বহন করতে পারে।
বর্তমানে ইউক্রেনের কাছে আছে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের স্টর্ম শ্যাডো ও যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি ট্যাক্টিক্যাল মিসাইল। জার্মানির টরাস এসব মিসাইলের চেয়েও শক্তিশালী। টরাস মিসাইলের আছে শক্তিশালী ওয়ারহেড। যা দিয়ে বাঙ্কার, বিভিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা, জাহাজ ও গোলাবারুদের মজুদ ধ্বংস করা যায়। এই মিসাইলটি জিপিএস ব্যবস্থা ছাড়াই অনেক পথ অতিক্রম করতে পারে।
তবে এই মিসাইল পেতে ইউক্রেনে এত আগ্রহের পেছনে আরও কারণ আছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেনের কাছে থাকা এখনকার মিসাইলগুলো রাশিয়ার সব স্থাপনায় পৌঁছেতে অক্ষম। তবে টরাস মিসাইল রাশিয়ার যেকোন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারবে। এছাড়া কৌশলগত গুরুত্বপুর্ণ রাশিয়ার কার্চ সেতুকে সহজেই লক্ষ্যবস্তু বানাতে পারবে।
১১ মাইল দীর্ঘ কার্চ সেতু ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করেছে। যা মস্কো লজিস্টিকস পথ হিসেবে ব্যবহার করে। এই সেতুকে কিয়েভ কয়েকবার ধ্বংস করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। এ বিষয়ে লন্ডনের কিংস কলেজের ডিফেন্স স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ ড ম্যারিনা মিরন বলেছেন, একটি বা দুটি টরাস মিসাইল দিয়ে এই সেতুকে ধসিয়ে ফেলা সম্ভব হবে।
এদিকে ইউক্রেনকে টরাস মিসাইল হস্তান্তরের খবরে বেজায় ক্ষেপেছে রাশিয়া। ক্রেমলিন বলছে, টরাস মিসাইল দিয়ে ইউক্রেন রাশিয়ায় হামলা চালালে তা হবে যুদ্ধের সামিল। যা রাশিয়াকে পশ্চিমাদের সঙ্গে পরমাণু যুদ্ধে উসকে দিবে।
এনএস/