আইন-বিচার

বাবার পরিচয় পেতে আদালতে ছোট্ট আফিয়া

বায়ান্ন প্রতিবেদন

ছবি: সংগৃহীত

সাড়ে তিন বছরের ছোট্ট আফিয়া। দিনের পর দিন মা বিউটি আক্তারের সঙ্গে আদালত পাড়ায় ঘুরছে শুধু একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে। তার বাবা কে? বিউটি আক্তার (ছদ্মনাম) নিজেও জানেন না তার স্বামীর নাম বা ঠিকানা। কারণ তিনি কখনোই ওই ব্যক্তির সম্পর্কে কিছু জানেননি। 

জানা যায়, ২০১৯ সালে তার সৎ মা বিউটি আক্তারকে বিক্রি করে দেয় একটি যৌনপল্লীতে। সেখানে থাকার পর বিউটি গর্ভবতী হয়ে পড়লে যৌনপল্লীর কিছু লোক তাকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের কলাবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে ফেলে চলে যান। পরবর্তীতে মাদারীপুরের কলাবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। এরপর তাকে ফরিদপুরের সেফ হোমে পাঠানো হয়। সেখানেই তিনি সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে আফিয়াকে জন্ম দেন।

এখন সেই ছোট্ট মেয়ে আফিয়া হাঁটি-হাঁটি-পা-পা করে বড় হচ্ছে। কিন্তু তার পিতৃপরিচয় এখনও অজানা। এরই মধ্যে বিউটি তার মেয়ের জন্য একটি স্বাভাবিক এবং সুখী জীবন চাচ্ছেন, যাতে তারা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। এর জন্য দরকার একটি কর্মসংস্থান।  

আদালত এখন তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আফিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত আদালত। মা-মেয়ে দুজনের জন্যই নতুন জীবনের উপযোগী পদক্ষেপ নিয়েছে মাদারীপুর শিশু আদালত। 

গেল রোববার ( ০১ জুন) শিশু আদালতের বিচারক শরীফ এ এম রেজা জাকেরের নির্দেশে মা ও মেয়েকে পুলিশি নিরাপত্তায় বরিশালের সেইফজোনে পাঠানো হয়। সেখানেই বিউটি আক্তার প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন এবং তার ভবিষ্যতের জন্য সঠিক পথ তৈরি করতে পারবেন।

বিউটি আক্তার জানিয়েছেন, আমরা আর কোনোভাবে বন্দি জীবন চাই না। আমি আমার মেয়েকে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। চাই, আমার এবং আমার মেয়ের জীবন আগের মতো কষ্টের না হয়ে সবার মতো সুখী হোক।

ফরিদপুর জেলা পুলিশের এএসআই মোহাম্মদ আব্দুর সবুর মিয়া বলেন, মা ও মেয়ে দুজনের অবস্থা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে আমরা তাদের পিতৃপরিচয় খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছি।

মাদারীপুর আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম খান বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত বিউটি আক্তারের স্বামী এবং আফিয়ার বাবা আইনের আওতায় আসা উচিত।

এদিকে মাদারীপুর শিশু আদালতের পেশকার জালাল মোল্লা বলেছেন, আদালত মা ও মেয়ের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছে। পাশাপাশি যদি কেউ মা ও মেয়ের দায়িত্ব নিতে চান তারাও আবেদন করতে পারবেন।

এসকে// 

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #আফিয়া #যৌনপল্লী