পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা লাখো মুসল্লি অবস্থান নিয়েছেন মক্কার পাশের মিনায়, যা তাঁবুর শহর নামেও পরিচিত। বুধবার রাতে মিনায় কাটানোর পর বৃহস্পতিবার (০৫ জুন) তারা রওনা হবেন হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান আরাফাতের ময়দানে।
৯ জিলহজ, বৃহস্পতিবার, আরাফাতের বিশাল প্রান্তর মুখরিত হবে লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে। সাদা কাপড়ে (ইহরাম) জড়ানো হাজিরা একত্রিত হবেন সেখানে। দিনটিকে হজের মূল দিন হিসেবে ধরা হয়, কারণ এ সময় আরাফাতে অবস্থান করাই হজের প্রধান ফরজ কাজ। মসজিদে নামিরায় খুতবা দেবেন হজের ইমাম। এ বছর সেই দায়িত্ব পালন করবেন প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ শেখ সালেহ বিন হুমাইদ। খুতবাটি ৩৪টি ভাষায় অনুবাদ করে প্রচার করা হবে।
চলতি বছরে প্রায় ১৪ লাখ ৭০ হাজার বিদেশি হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। স্থানীয়দের নিয়ে এই সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে এবার হজে গেছেন ৮৬ হাজার ৯৫৮ জন।
আরাফাতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান শেষে হাজিরা যাবেন মুজদালিফায়। সেখানে রাত কাটিয়ে পাথর সংগ্রহ করবেন। ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ শেষে তারা মিনায় ফিরে গিয়ে বড় শয়তানকে পাথর মারবেন, কোরবানি দেবেন এবং মাথা মুন্ডন বা চুল ছেঁটে মক্কায় ফিরে কাবা শরিফে তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার সায়ি করবেন।
এরপর আবার মিনায় ফিরে ১১ ও ১২ জিলহজ তিনটি শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপের মাধ্যমে হজের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালন করবেন। সবশেষে কাবা শরিফে বিদায়ি তাওয়াফের মাধ্যমে হজ সম্পন্ন হবে।
তীব্র গরমের মধ্যে এবার হজ পালিত হওয়ায় সতর্ক রয়েছে সৌদি সরকার। দিনের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ায় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সরাসরি রোদে বের না হয়ে তাঁবুতে থাকার পরামর্শ দিয়েছে হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়।
গত বছর প্রচণ্ড গরমে ১ হাজার ৩০১ জন হাজি মারা গিয়েছিলেন, বেশিরভাগই ছিলেন অনিবন্ধিত। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার নেওয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। হিটস্ট্রোক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলায় ছায়াযুক্ত স্থান ১২ একর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, মোতায়েন করা হয়েছে ৪০০’র বেশি কুলিং ইউনিট এবং হাজার হাজার অতিরিক্ত চিকিৎসাকর্মী।
এমএ//