জীবনের প্রথম সাহস, প্রথম নির্ভরতা, প্রথম নিরাপত্তার প্রতীক যে মানুষটি তিনিই হলেন বাবা। সন্তানের প্রতিটি সফলতার পেছনে যার নীরব উপস্থিতি। আজকের এই দিনটি তাকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা আর কৃতজ্ঞতা জানানোর। বিশ্বব্যাপী আজ রোববার (১৫ জুন) পালিত হচ্ছে বিশ্ব বাবা দিবস।
বাবা মানেই ছায়া হয়ে পাশে থাকা একজন মানুষ। যিনি অনেক সময় আবেগ প্রকাশ না করলেও সন্তান যেন কিছুতেই কষ্ট না পায় সেই চেষ্টায় থাকেন সারাজীবন। আগের দিনের বাবারা ছিলেন শাসনের প্রতীক, কঠোর নিয়মের রূপকার। কিন্তু সময় বদলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে বাবা আর সন্তানের সম্পর্কের ধরনও। আজকের বাবা অনেক বেশি বন্ধুবান্ধবের মতো, অনুভূতিপ্রবণ, এবং সন্তানের ছোট-বড় সিদ্ধান্তে অংশগ্রহণকারী।
শুধু জন্মদাতা হিসেবেই নয়, একজন বাবার ভূমিকা এখন একজন মেন্টর, সাপোর্ট সিস্টেম এবং নীরব সংগ্রামী হিসেবেও বিবেচিত। বাবা দিবসে সন্তানেরা নানাভাবে তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করে থাকে। কেউ উপহার দিয়ে, কেউ সামাজিক মাধ্যমে স্মৃতিচারণায়, আবার কেউবা শুধু একটা আলিঙ্গনে বলে ফেলেন হাজার না বলা কথা।
এই বাবা দিবস দিবস নিয়েও রয়েছে অনেক কথা। প্রথম বাবা দিবস ১৯১০ সালের ১৯ জুন যুক্তরাষ্ট্রে উদযাপিত হয়। আর এই দিবসের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল সোনোরা স্মার্ট ডড নামের এক মেয়ের। যিনি চেয়েছিলেন তার বাবা উইলিয়াম জ্যাকসন স্মার্টের প্রতি সম্মান জানাতে।
ডডের বাবা ছিলেন একাকী পিতা। যিনি মায়ের মৃত্যুর পর ছয় সন্তানকে একা হাতে নিজে মানুষ করেছিলেন। সে মনে মনে ভাবতেন মায়ের জন্য যেমন মা দিবস রয়েছে, তেমনিভাবে বাবার জন্যও একটি বিশেষ দিন থাকা উচিত। আর এই ভাবনা থেকেই বাবাকে ঘিরে বাবা দিবস উদযাপনের সূচনা।
১৯৭২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এটিকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেন এবং এরপর থেকেই প্রতি বছর জুনের তৃতীয় রোববার ‘ফাদার্স ডে বা বাবা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
একজন পিতার অবদান এত গভীর যে তা একদিনে সীমাবদ্ধ রাখা যায় না। প্রতিটি দিনে, প্রতিটি ক্ষণেই বাবার প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ জরুরি।
একজন বাবা নিঃশব্দে তার সন্তানদের জন্য যে জীবন উৎসর্গ করেন, সেই ত্যাগের মূল্য কখনোই পরিমাপ করা সম্ভব নয়। তিনি শুধু অভিভাবক নন, তিনি একজন যোদ্ধা, একজন কারিগর, একজন নায়ক।
এসকে//