চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইসরায়েলকে যেকোনো ধরনের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহকারী রাষ্ট্রগুলোকে ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসনে অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং ইরানের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে — এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর সক্রিয় যোদ্ধাদের প্রধান দপ্তর খাতাম আল-আম্বিয়া কেন্দ্রীয় সদর দফতর (কেসিএইচকিউ)।
ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সির খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শনিবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় প্রকাশিত বিবৃতিতে কেসিএইচকিউ জানায়, ইসরায়েলের হাতে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ও ব্যয়বহুল ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও তারা ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে তাদের রাডার এবং বিমান প্রতিরক্ষা সক্ষমতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং তারা অস্ত্র ও গোলাবারুদের ঘাটতিতেও ভুগছে। এরই মধ্যে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সহায়তা পেয়ে আসছে।
এতে আরও বলা হয়, ইসরায়েলি সরকারকে সহায়তা করার জন্য আকাশ বা সমুদ্রপথে যেকোনো ধরণের সামরিক সরঞ্জাম বা রাডার সরবরাহ করলে, ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন যুদ্ধে সেই দেশ সরাসরি অংশীদার হিসেবে বিবেচিত হবে। পরবর্তীতে সেই দেশ ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর জন্য বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।
গত ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণে যায় ইসরায়েল। তারা দেশটির পারমাণবিক, সামরিক এবং আবাসিক স্থাপনাগুলিতে বিমান হামলা চালায়। এতে ৪০০ জনেরও বেশি ইরানি নিহত হন, যাদের মধ্যে শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।
এরপরেই পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইরানের সামরিক বাহিনী। অপারেশন ট্রু প্রমিজ ৩-এর অংশ হিসেবে ২১ জুন পর্যন্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ১৮টি প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তারা।
সবশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই খবর ঘটা করে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের এ ভূমিকায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশংসায় মেতেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য।
তবে মার্কিন মুলুকেই ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে পাওয়া গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। দেশটির রাজনীতিবিদসহ সাধারণ মানুষের একটি অংশ ট্রাম্পের সমালোচনায় মেতেছেন। তাদের মুখে শোনা গেছে শান্তির বার্তা ‘নো মোর ওয়্যার’।
উল্লেখ্য, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সম্পৃক্ততা এবং কেসিএইচকিউ’র হুঁশিয়ারির পর এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন— ইরান নিজেদের ঘোষণাকে কতটা কার্যকর করে তোলে এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। আপাতত গোটা বিশ্বের উদ্বিগ্ন দৃষ্টি সেদিকেই নিবদ্ধ।
এসি//