অপরাধ

যুবদল নেতাসহ আটক ২

প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে হত্যা, ভিডিও ভাইরাল

রাজধানীর পুরান ঢাকায় মো. সোহাগ (৩৯) নামের এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যুবদল নেতা মহিন ও তারেককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ

বুধবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে মিটফোর্ড হাসপাতালের তিন নম্বর গেটসংলগ্ন রজনী ঘোষ লেনে এ ঘটনা ঘটে। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানিয়েছে,  নিহত সোহাগ মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙাড়ি ও পুরোনো বৈদ্যুতিক কেবল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার দোকানের নাম ছিল ‘সোহানা মেটাল’। বিদ্যুতের তামার ও সাদা তারের ব্যবসার একটি সিন্ডিকেট পরিচালনা করতেন তিনি। এই ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া ছিলেন মাহমুদুল হাসান মহিন ও সারোয়ার হোসেন টিটু। তারা নিয়মিত চাঁদা দাবি করছিলেন এবং ব্যবসার ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিলেন। এই বিরোধ থেকেই হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত বলে জানিয়েছে পুলিশ।

তবে নিহতের বন্ধু মামুনের দাবি , দুই তিন মাস ধরে মহিন প্রতি মাসে চাঁদা দাবি করত সোহাগের কাছে। সোহাগ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কিছুদিন আগে দোকানের সামনে এসে তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়। বুধবার সন্ধ্যায় সোহাগকে একা পেয়ে মঈনসহ ৪-৫ জন মিলে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করে। নির্যাতনের সময় তারা তার পরনের পোশাকও খুলে ফেলে।

এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এসময় কেউ ভয়ে এগিয়ে যেতে পারেননিকারণ মহিন যুবদলের চকবাজার থানার সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। তার বিরুদ্ধে মিটফোর্ড হাসপাতালের ফুটপাত ও কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগেও মোটা অঙ্কের ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

লালবাগ থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রাব্বি জানান, মহিন যুবদলের সক্রিয় কর্মী। দীর্ঘদিন ধরে চকবাজার থানায় যুবদলের কোনো কমিটি নেই। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মহিন এ ধরনের কর্মকাণ্ড করতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এ ঘটনায় নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় নাম উল্লেখ করে ১৯ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিরা হলেন- ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত মাহমুদুল হাসান মহিন, সারোয়ার হোসেন টিটু, মনির ওরফে ছোট মনির, আলমগীর, মনির ওরফে লম্বা মনির, নান্নু, সজীব, রিয়াদ, টিটন গাজী, রাকিব, সাবা করিম লাকী, কালু ওরফে স্বেচ্ছাসেবক কালু, রজব আলী পিন্টু, মো. সিরাজুল ইসলাম, রবিন, মিজান, অপু দাস, হিম্মত আলী ও আনিসুর রহমান হাওলাদার।

প্রসঙ্গত, এ ঘটনায় জড়িতদের সবাইকে শনাক্ত করেছে পুলিশ, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

 

আই/এ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #যুবদল #পাথর