আন্তর্জাতিক

ইয়েমেন উপকূলে নৌকাডুবিতে ৬৫ জন শরণার্থী ও অভিবাসীর মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ছবি: আল জাজিরা

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইয়েমেন উপকূলে একটি নৌকাডুবির ঘটনায় ৬৮ জন আফ্রিকান শরণার্থী ও অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৭৪ জন। ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে দেড় শতাধিক অভিবাসী ছিলেন এবং নিহত সবাই আফ্রিকান নাগরিক।

রোববার (০৩ আগস্ট) জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) সূত্রে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) দেয়া এক বিবৃতিতে ইয়েমেনে আইওএম-এর প্রধান আবদুসাত্তার এসোয়েভ বলেন, ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে ১৫৪ জন ইথিওপীয় যাত্রী ছিলেন। এটি ইয়েমেনের আবিয়ান প্রদেশের উপকূলে ডুবে যায়।

তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনায় ১২ জন বেঁচে আছেন। খানফার জেলায় ৫৪ জনের মৃতদেহ উপকূলে ভেসে এসেছে এবং অন্য একটি স্থানে আরও ১৪টি মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইয়েমেনের স্বাস্থ্য বিভাগ এর আগে ৫৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিল।

জাঞ্জিবার শহরের স্বাস্থ্য কার্যালয়ের পরিচালক আবদুল কাদের বাজামিল জানান, নিহতদের দাফনের জন্য শহরের শাকরা এলাকার কাছে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেও উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

আফ্রিকার হর্ন অঞ্চল ও ইয়েমেনের মধ্যে সমুদ্রপথ শরণার্থী ও অভিবাসীদের জন্য বেশ সাধারণ হলেও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ রুট। ২০১৪ সালে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর দেশটি থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও বেড়েছে।

অবশ্য ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে হুথি বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি হওয়ার পর সহিংসতা কিছুটা কমেছে এবং মানবিক সংকট আংশিক হ্রাস পেয়েছে।

এদিকে, সোমালিয়া ও ইথিওপিয়ার মতো দেশের সংঘাতপীড়িত মানুষজন ইয়েমেনে আশ্রয় নিতে বা সেখান দিয়ে উপসাগরীয় ধনী দেশগুলোর উদ্দেশে যাত্রা করতে গিয়ে এই বিপজ্জনক পথে পাড়ি দিচ্ছে। আইওএম-এর মতে, এটি বিশ্বে অন্যতম ব্যস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসন রুট। মূলত এই পথ ধরে ইয়েমেনে পৌঁছাতে অভিবাসীরা প্রায়ই অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নৌকায় লোহিত সাগর পাড়ি দেন।

আইওএম-এর তথ্যমতে, ২০২৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৬০ হাজারের বেশি শরণার্থী ও অভিবাসী ইয়েমেনে পৌঁছেছেন, যা আগের বছরের ৯৭ হাজার ২০০ জনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। আইওএম-এর মে মাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সমুদ্রপথে নজরদারি বেড়ে যাওয়ায় এই সংখ্যা কমেছে।

এই সমুদ্রপথে গত দুই বছরে প্রাণ হারিয়েছেন শত শত মানুষ। আইওএম-এর তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত বছরই এ রুটে ৫৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গত এক দশকে এই পথে নিখোঁজ হয়েছেন অন্তত ২ হাজার ৮২ জন, যাদের মধ্যে ৬৯৩ জনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডুবে যাওয়ার তথ্য মিলেছে।

বর্তমানে ইয়েমেনে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার শরণার্থী ও অভিবাসী অবস্থান করছেন।

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #ইয়েমেন #নৌকাডুবি